আওয়ামী লীগ ছাড়া সব দলের ভালো মানুষদের জন্য এনসিপির দরজা খোলা: সারজিস

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৫ পিএম
আওয়ামী লীগ ছাড়া সব দলের ভালো মানুষদের জন্য এনসিপির দরজা খোলা: সারজিস

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দলের ভালো মানুষদের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দ্বার উন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির এক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভার আয়োজন করে দলটির ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) ও ঢাকা জেলা শাখা।

সারজিস বলেন, ‘সব দলের ভালো মানুষদের জন্য এনসিপির দরজা খোলা। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং তার যেকোনো সহযোগী সংগঠনের পদে ছিল, এমন কেউ এনসিপির কোনো আহ্বায়ক কমিটিতে আসতে পারবে না। নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে রাখা যাবে না। একদম স্পষ্ট কথা হচ্ছে, কেউ যদি মনে করেন এনসিপিতে এসে আগের বা নিজের কোনো ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবেন বা প্রত্যাশা করবেন, তাহলে আপনারা হয় আগের জায়গায় ফিরে যান অথবা এনসিপি থেকে দূরে থাকুন।’

সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপি বাংলাদেশে ৪৬ নম্বর রাজনৈতিক দল হতে আসেনি। আমরা হয় জনগণের হয়ে সরকারি দল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করব, না হয় শক্তিশালী বিরোধী দল হব। জাতীয় পার্টির মতো পোষা বিরোধী দল হতেও আমরা আসিনি।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জাতীয় পার্টি যখন সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে ছিল, তখন তারা ‘পোষা’ বিরোধী দল হিসেবে সমালোচিত হতো।

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা এনসিপি গড়ে নির্বাচনের পথে এগোচ্ছেন। আগামীকাল শনিবার থেকে এনসিপি জেলা-মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা শুরু করতে যাচ্ছে বলে সভায় জানান সারজিস। আজ থেকে তিন দিনের মধ্যে এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সারজিস বলেন, ‘১৫ নভেম্বরের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কিংবা মহানগর, থানা, ওয়ার্ড, বাংলাদেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকতে হবে। যদি আমরা এটা করতে পারি, তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি বাংলাদেশের শক্তিশালী দুটি রাজনৈতিক দলের একটি হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

কমিটি করার ক্ষেত্রে কিছু ‘ক্রাইটেরিয়া’ বা মানদণ্ডের দিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, আলাদাভাবে প্রতিটি থানায় গিয়ে সমন্বয় সভা করে সেই থানার আহ্বায়ক কমিটি দিতে হবে। বাংলামোটরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে কোনো কমিটি দেওয়া যাবে না। কমিটিগুলোর আহ্বায়ক চল্লিশোর্ধ্ব হতে হবে, সদস্যসচিব কোনোভাবেই ৩৫ বছরের নিচে হবে না। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং তার যেকোনো অঙ্গসংগঠনের পদে ছিল, এমন কেউ এনসিপির কোনো আহ্বায়ক কমিটিতে আসতে পারবে না। নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত কাউকে কমিটিতে রাখা যাবে না।

অন্য সব রাজনৈতিক দলের ভালো মানুষদের জন্য এনসিপির দরজা খোলা বলে জানান সারজিস। তবে তিনি সেই সঙ্গে বলেন, ‘একদম স্পষ্ট কথা হচ্ছে, কেউ যদি মনে করেন এনসিপিতে এসে আগের বা নিজের কোনো ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবেন বা প্রত্যাশা করবেন, তাহলে আপনারা হয় আগের জায়গায় ফিরে যান অথবা এনসিপি থেকে দূরে থাকুন।’

আগামীর বাংলাদেশ যদি জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা সামনে ধারণ করে এগিয়ে চলে, তাহলে দুই বছর পরে এনসিপি বাংলাদেশের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত, গ্রহণযোগ্য এবং প্রত্যাশিত রাজনৈতিক দল হবে বলে মনে করেন সারজিস। সেই দিকটি মাথায় নিয়ে দলের নেতা–কর্মীদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির এই সমন্বয় সভায় দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল), জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য দেন।