আ. লীগের হতাশ সদস্যরা বিএনপিতে যোগ দিলে স্বাগত: রিজভী

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৮ মে ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
আ. লীগের হতাশ সদস্যরা বিএনপিতে যোগ দিলে স্বাগত: রিজভী

দুই মাসব্যাপী সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামী ১৫ মে থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। সদস্য সংগ্রহের এই পর্বে আওয়ামী লীগের হতাশ সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে দলটি। তবে শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে—কেবল তারাই যোগ দিতে পারবেন, যারা আওয়ামী লীগের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জমি দখল, অর্থ পাচার এবং লুণ্ঠনের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের সহযোগীদের দলে অনুপ্রবেশ রোধে তারা সতর্ক থাকবেন।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির সদস্য হতে পারেন কিনা, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে রিজভী বলেন, ‘ধরুন কেউ দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, অথবা এমন ব্যক্তি ছিলেন—যারা একসময় আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলেন কিন্তু পরে তাদের দুঃশাসন, বর্বরতা, লুটপাট এবং অর্থ পাচারে হতাশ হয়ে পড়েন—যারা এই ধরনের কার্যকলাপকে সমর্থন করেননি এবং ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। কেন তাদের আমাদের দলে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হবে না?’

তিনি বলেন, তাদের দল মূলত নতুনদের লক্ষ্য করেছে। এরমধ্যে রয়েছে সমাজে যাদের সুনাম এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, যেমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকার, এনজিও কর্মী, কৃষক ও শ্রমিক।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘এক্ষেত্রে, আমাদের দলের সদস্য হওয়ার মানদণ্ড হলো ব্যক্তিটি আমাদের আদর্শে বিশ্বাস করে কিনা।’

তিনি বলেন, তাদের দল আশা করে যে, সমাজের সকল স্তরের মানুষ—যারা বিএনপিকে সমর্থন করেন, দলের প্রতি অনুগত এবং যারা জাতীয়তাবাদী চিন্তাভাবনা ও আদর্শকে সমর্থন করেন, তারা দলের সদস্য হতে আগ্রহী হবেন।

বিএনপি নেতা তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তারা একটি পর্যালোচনা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করবেন যাতে অবাঞ্ছিত উপাদানগুলো দলে অনুপ্রবেশ না করে।

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, দলের সদস্য হতে আগ্রহীদের ২০ টাকায় একটি প্রাথমিক সদস্যপদ ফর্ম কিনতে হবে। অর্থ প্রদানের রশিদের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্রে বর্ণিত আবেদন ফর্মের সঙ্গে একটি হলফনামাও থাকবে।

তিনি বলেন, প্রাথমিক সদস্য হতে ইচ্ছুকদের এই আবেদন ফর্মটি পূরণ করতে হবে।

রিজভী বলেন, ‘পরবর্তীতে, এই ফর্মগুলো যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। অবশ্যই যাচাইকরণ করা হবে কারণ সন্ত্রাসবাদ, জমি দখল এবং অর্থ পাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা বিভিন্ন উপায়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে। আমরা সমাজ থেকে নতুন ব্যক্তিদের, যাদের সুনাম আছে এবং যারা তাদের সম্প্রদায়ে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত তাদের উপর মনোযোগ দিয়ে এটি(অনুপ্রবেশ) দৃঢ়ভাবে এড়াবো।’

তিনি বলেন, ১৫ মে থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত নবায়ন কর্মসূচির পাশাপাশি দল প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করবে।

রিজভী উল্লেখ করেন, দলটি এর আগে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনার জন্য একটি উপকমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রিজভীকে। আর সদস্য সচিব হিসেবে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত রয়েছেন।

তিনি বলেন, গতকাল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কমিটির একটি সভা হয়েছে। বিএনপির জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য দুই মাসব্যাপী এই অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠকে।

রিজভী বলেন, সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন অভিযানের মাধ্যমে তারা মূল্যায়ন করতে পারবে যে কতজন লোক দলের রাজনীতিতে জড়িত হতে আগ্রহী।

তিনি আরও বলেন, সকল বিভাগীয় শহরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই অভিযান শুরু হবে, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং যুগ্ম মহাসচিবরা অভিযান কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন।