নারীকে ভয়াবহ নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ, গ্রেপ্তার চার


যশোরের ঝিকরগাছায় নারীর মাথার চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক গণমাধ্যমেও এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক নারীকে ভয়াবহ কায়দার নির্যাতন করা হচ্ছে। সেখানে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ মিলে ফজিলা খাতুন নামে এক নারীর মাথার চুল কেটে এলোপাতাড়ি চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি মারছেন। একপর্যায়ে তারা ফজিলা খাতুনের মুখে কালি মাখিয়ে লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। ওই সময় নির্যাতনকারী ও অন্যদের উল্লাস ও ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়।
গত রবিবার এই ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- ফজিলা খাতুনের সাবেক পুত্রবধূ বিথীর স্বামী শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা।
বিষয়টি নিয়ে নির্যাতনের শিকার ফজিলা খাতুন ঝিকরগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝিকরগাছার ফজিলা খাতুনের ছেলে রায়হানের সঙ্গে পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের মেয়ে বিথীর দুই বছর আগে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে সাংসারিক গোলযোগের কারণে তাদের পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়। এরপর বিথীর বিয়ে হয় বেনেয়ালী গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সঙ্গে।
রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক পুত্রবধূর সঙ্গে দেখা করতে বেনেয়ালীতে যান ফজিলা খাতুন। সেখানে বিথীর বর্তমান স্বামী শিমুল, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালী গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম, তবিবরের স্ত্রী মাজেদা বেগম, বিথীর বর্তমান শাশুড়ি আছিরন বেগম এবং মা রহিমাসহ বেশ কয়েকজন ফজিলা বেগমকে ধরে নির্যাতন করেন।
সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক গণমাধ্যমেও প্রচার করা হয়। এরপর বিষয়টি সবার নজরে আসে।
পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার ফজিলা খাতুনকে শিমুল তার বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। একপর্যায়ে দেশি অস্ত্র দিয়ে তাকে মারধর করেন এবং পুলিশে সোপর্দ করারও হুমকি দেন। এই নির্যাতনের কথা কোথাও জানানো হলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন নির্যাতনকারীরা।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকার বলেন, ‘ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর তাৎক্ষণিক আমার নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ রবিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খানকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করি। এদের সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’