ফের ‘গণতন্ত্রে ভূমিকা রাখবেন’ খালেদা জিয়া, প্রত্যাশা আসিফ নজরুলের
বিদেশে উন্নত চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরে গণতন্ত্র ও অগ্রগতিতে ফের ‘ভূমিকা রাখবেন’ বলে আশা রেখেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে সোমবার এই উপদেষ্টা তার এই প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আসিফ নজরুল বলেন, “আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন দেশে। আবার যেন ভূমিকা রাখতে পারেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র আর অগ্রগতি বিনির্মাণে।”
সব প্রস্তুতি শেষে খালেদা জিয়া মঙ্গলবার লন্ডনে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ করে সেদিন রাতে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। প্রথমে তিনি লন্ডনে তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যাবেন।
ছেলের বাসায় কয়েকদিন থাকার পরে লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রিটেন যাওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার।
আসিফ নজরুল বলেছেন, গত নভেম্বরে যখন চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে খালেদা জিয়ার বাসভবনে যান। ওই সময় তাদের মধ্যে একান্তে কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয় বলেও জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
“আমি উনার স্বাস্থের কথা, হাসিনা শাসনামলের দু:সহ সময়ের কথা জানতে চাই। লক্ষ্য করি তিনি একবারো শেখ হাসিনার নাম নিচ্ছেন না। অবশেষে সরাসরি জানতে চাই: এতো সাফার করলেন আপনি, শেখ হাসিনার উপর রাগ লাগে না আপনার?
“তিনি একটু নীরব থাকেন। তারপর ম্লানকণ্ঠে বলেন, রাগ করে কি করবো বলেন! আল্লাহ্-র কাছে বলি।”
খালেদা জিয়ার ওই কথায় ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল।
“পনেরটা বছর শেখ হাসিনা কী জঘন্য ও অশ্লীল মিথ্যেচার আর নির্মম নির্যাতন করেছেন বেগম জিয়ার প্রতি (এবং একইসঙ্গে উনার দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে)! অথচ একটা খারাপ শব্দও তিনি উচ্চারণ করলেন না শেখ হাসিনাকে নিয়ে”, লিখেছেন আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের প্রশংসা করার পাশাপাশি অন্তবর্তী সরকারের সাফল্যও কামনা করেন।
“তিনি (খালেদা জিয়া) জানান সবসময় তিনি খবর রাখেন দেশের।”
দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে গত কয়েক বছর থেকে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তার পরিবারের সদস্যরা ও বিএনপি। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
পরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতন হলে অন্তর্বর্তী সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। এরপর তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।এরপর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তার লন্ডন যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হয়।
লন্ডন থেকে ব্রিটেন যাওয়ার পর সেখানে মেরিল্যান্ডে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপিটালের মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি কেয়ার ইউনিটে লিভার ট্রান্সপারেন্টের চিকিৎসা নেবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা দলের সদস্যরা বলেছেন, এরইমধ্যে তার যাবতীয় চিকিৎসার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট সেখানে পাঠানো হয়েছে।