বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে রপ্তানির ভিত্তি শক্তিশালী করুন: ড. ইউনূস
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে সামগ্রিক রপ্তানি বাড়াতে সেবা খাতে আরও বেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে রপ্তানির ভিত্তি শক্তিশালী করতে দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। এটি বাড়াতে পণ্যের পাশাপাশি সেবা খাতে আরও বিনিয়োগে সব ব্যবসায়ীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৫ এর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উদ্যোক্তাদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, রপ্তানিযোগ্য পণ্য উৎপাদন করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো পণ্যটির তৈরি করেছে তা জানা জরুরি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবছরই 'প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার' ঘোষণা করা হয়ে থাকে। এ বছর বর্ষসেরা পণ্য হলো ফার্নিচার পণ্য।
ড. ইউনূস বলেন, এই প্রক্রিয়ার পাশাপাশি তিনি 'এন্টারপ্রেনার অব দ্য ইয়ার' চালু করতে চান, যাতে সবাই জানতে পারে যে এই পণ্য কারা উৎপাদন করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বৈচিত্র্যময় পণ্যের উপস্থিতির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্যগুলোর প্রচারে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) ইতোমধ্যে বৈশ্বিক পোশাক বাজারে নেতৃস্থানীয় অবস্থান তৈরি করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, রপ্তানি বাণিজ্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র্য ও বেকারত্ব নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ‘এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
মাসব্যাপী এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রথমবারের মতো বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়নের জন্য স্পেস অনলাইনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলায় প্রথমবারের মতো ই-টিকেটিং সুবিধাও চালু করা হয়েছে।
মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি উবার সেবার থাকছে বিশেষ ছাড়।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয় 'জুলাই চত্বর' ও 'ছত্রিশ চত্বর'।
দেশের তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উৎসাহিত করতে একটি ইয়ুথ প্যাভিলিয়নও স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর মেলায় সম্ভাবনাময় খাত/পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদেশি উদ্যোক্তা ও অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে থাকবে পৃথক সোর্সিং কর্নার, ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন।
বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে টেকনোলজি কর্নার স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সিটিং কর্নার থাকবে।
বিশুদ্ধ বিনোদন নিশ্চিত করতে মেলায় একটি শিশুপার্কও রয়েছে।
পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে টানা চতুর্থবারের মতো এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মেলার সাজানোর নকশা অনুযায়ী দেশীয় উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্তোরাঁ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।