জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি বাতিল
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে গঠিত 'জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’ বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কমিটি বাতিল করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ছয় সদস্যের এ কমিটির সভাপতি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সাবেক সিনিয়র সচিব শামসুল আলম গত ২৭ অক্টোবর এক ফেসবুক পোস্টে এ কমিটির ভূমিকার সমালোচনা করেন।
এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। সদস্য সচিব ছিলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ যুগ্ম-সচিব ও এর ওপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে গত ৮ জানুয়ারি গঠন করা হয় ‘জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’। তখন কমিটিতে সদস্য সচিব ছিলেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। পরে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিতে উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হলে গত ২০ মার্চ তাকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়।
এরপর ২৫ আগস্ট সদস্য থেকে কমিটির সদস্য সচিব নিয়োগ পান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। একইসঙ্গে কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিটি পুনর্গঠন করে সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পুনর্গঠিত কমিটিতে সদস্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে বাদ দেওয়া হয়।
সাবেক সিনিয়র সচিব শামসুল আলম গত ২৭ অক্টোবর ফেসবুক পোস্টে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসএসবির (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) ভূমিকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ওনারা ওখানে বসে কি করেন? কেবল যোগ্য অফিসারদের আটকানো নাকি? জনপ্রশাসন কমিটির কাজটাই বা কি? রুলস অব বিজনেসের বাইরে গিয়ে করা এই অন্যায্য কমিটি মোখলেসের এইসব দুবৃত্তায়নকে বৈধতা দিয়েছে কেবল! কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হওয়া সচিব তাদের হাত দিয়েই গেছে!
তিনি আরও লিখেছেন, 'এখনও ৩৪ জন ফ্যাসিস্ট সচিব থাকে কি করে? অথচ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসের অনুমোদনের পরও সিনিয়র মোস্ট যোগ্য কর্মকর্তাকে তার প্রাপ্য পদে বসতে দেননি এই মোখলেস গং। এতবড় অবিচার বাংলার ইতিহাসে আর কখনও হয়নি। এই এসএসবি, এই কমিটি থাকায় মেধাবীদের দেশের জন্য কাজ করতে দেয়া হয় না। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। এত এত অন্যায় করতে আমরা হাসিনাকে তাড়াইনি। হিসাব দিয়ে যেতে হবে।'
