রাতে যুবদলের দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ১

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৮ এএম
রাতে যুবদলের দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ১

চট্টগ্রামে গভীর রাতে যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এতে এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম মো. সাজ্জাদ (২২)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোডের বগার বিলমুখ এলাকায় এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও দলীয় সূত্র বলছে, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

নিহত সাজ্জাদ নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) এমদাদুল হক বাদশার অনুসারী।

দলীয় সূত্র বলছে, এমদাদুল ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহর অনুসারীদের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির ঘটনায় জড়িত হিসেবে নাম আসা সিরাজের অনুসারী বোরহান উদ্দিন নগর ছাত্রদলের সাবেক আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক। তবে তিনি এখন নিজেকে যুবদলের সংগঠক দাবি করে আসছেন। কিন্তু এখন যুবদলের কমিটি নেই।

গোলাগুলির বিষয়ে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত আছেন বেশ কয়েকজন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

দলীয় সূত্র বলছে, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে এমদাদুলের অনুসারী যুবদল কর্মী মো. জসিমকে গতকাল রাতে সিরাজের অনুসারী বোরহান উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম সোহেল তুলে নিয়ে যান।

জসিম সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন তাঁর ছবি ব্যবহার করে নগরের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের টাঙানো ব্যানার তুলে ফেলার নির্দেশ দেন। এরপর বাকলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় লাগানো ব্যানারগুলো খুলে ফেলেন জসিম। এর মধ্যে শাহাদাত ও সিরাজের ছবিসহ বোরহানের ব্যানার ছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল রাতে তাঁকে (জসিম) ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে আটকে রেখে মারধর করা হয়।

দলীয় সূত্র বলছে, জসিমকে আটকে রাখার খবর ছড়িয়ে পড়লে এমদাদুলের অনুসারীরা তাঁকে ছাড়িয়ে আনতে যান। এ সময় বাকলিয়া এক্সেস রোডে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। পরে আহত অবস্থায় হাসপাতাল আনা হলে সাজ্জাদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাঁর বুকে গুলি লাগে।

জানতে চাইলে এমদাদুল বলেন, সিরাজের ছবি দিয়ে ব্যানার টাঙিয়েছিলেন বোরহান। মেয়র শাহাদাতের নির্দেশে ব্যানারগুলো খুলে ফেলায় জসিমকে ধরে নিয়ে যান বোরহানরা। ছাড়িয়ে আনতে গেলে গুলি করেন।

জানতে চাইলে সিরাজ গতকাল রাতে বলেন, বোরহান ও সোহেল তাঁর অনুসারী নয়। তিনি এখন পটিয়ায় আগামী নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। বোরহান-সোহেলরা খারাপ জানার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে তিনি কোনো যোগাযোগ রাখেননি।

নিহত সাজ্জাদকে দেখতে রাতে হাসপাতালে ছুটে আসেন তাঁর মা ফরিদা বেগম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে কেন গুলি করেছে? তার খুনিদের বিচার চাই।’

নিহত সাজ্জাদের ভাই মোহাম্মদ ইমরান বলেন, তাঁর ভাই ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। তিনি তাঁর ভাইয়ের খুনিদের ফাঁসি চান।