শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ আটকে দিলো পুলিশ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম
শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ আটকে দিলো পুলিশ
ছবি : সংগৃহীত

বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মাজার গেটের কাছাকাছি যাওয়ার পর তাদের আটকে দিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় এ কর্মসূচি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষকরা মাজার গেটেই অবস্থান করছেন।

এর আগে, আজ দুপুর পৌনে ২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচির ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মবিরতি চলবে। ২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা, ১৫০০ টাকা মেডিক্যাল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কোনও শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না।’

দেলোয়ার হোসেন আজিজী জানান, গত ১৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা, সচিব এবং সিনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই তিনটি দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এখনও তা কার্যকর হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনার সব পথ শেষ করেছি। সিদ্ধান্ত হয়েও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনও বিষয় নেই। কেবল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন চাই।’

তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে পদযাত্রার সময় কিছুটা পিছিয়ে বিকাল ৪টা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, ‘যদি শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে প্রেস ব্রিফিং করে জানায় যে দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন দুই-তিন দিনের মধ্যে দেওয়া হবে— তাহলে আমরা সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা স্থগিত করব। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’

তিনি দাবি করেন, ‘সারাদেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো এই আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা জানিয়েছে। এখন আর এটা কেবল শিক্ষকদের আন্দোলন নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ এর সঙ্গে একমত।’

এর আগে, গত রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

রবিবার ও সোমবার রাতভর রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন শিক্ষকরা। কেউ প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটান। তাদের দাবি, প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।

অন্যদিকে, সারা দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বর্তমানে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন। তারা প্রতিদিন নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও কোনও শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন না, পাঠদান কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, শিক্ষক লাউঞ্জ কিংবা অফিসকক্ষে বসেই তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়েও প্রতিবাদ করছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ঢাকায় অবস্থানরত আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অসংখ্য পোস্ট দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকরা।