গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। বৈশ্বিক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশীয় পর্যায়ে নির্গমন হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘পাথওয়েস টু ইমিশন রিডাকশন ইন রাইস অ্যান্ড লাইভস্টক সেক্টর ইন বাংলাদেশ’- শীর্ষক মিটিগেশন মার্কেটপ্লেসের ওয়ার্কশপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে ধান ও প্রাণিসম্পদ খাত আমাদের খাদ্য ও জীবিকার মূল ভিত্তি। এই দুটি খাত শুধু খাদ্য সরবরাহ নয়, বরং মানুষের জীবিকা ও অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।’

তিনি বলেন, ‘সুষম খাদ্য ব্যবহার করলে রুমিন্যান্ট (জাবর কাটা) প্রাণীর হজম প্রক্রিয়াজনিত মিথেন নির্গমন উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাণিখাত থেকে নির্গত গ্যাসের প্রধান উৎস দুটির মিন্যান্ট (জাবর কাটা) প্রাণীদের হজম প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন মিথেন এবং প্রাণীর মল ব্যবস্থাপনায় উৎপন্ন মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড। গবাদিপশুর মধ্যে গরু সবচেয়ে বেশি নির্গমনের জন্য দায়ী, এরপর রয়েছে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। বিশ্বজুড়ে মানবসৃষ্ট মোট গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রায় ১৪.৫% এ খাত থেকে আসে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) গরুর মিথেন নির্গমন পরিমাপ এবং তা হ্রাসে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি গবাদিপশুর নির্গমন নির্ধারণে উন্নত মডেল ও পদ্ধতি ব্যবহার করছে। উন্নতমানের খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও খাদ্যের গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে কীভাবে নির্গমন হ্রাস করা যায়, তা অনুসন্ধান করছে বিএলআরআই।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘অতীতে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের পশু পালনের ফলে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন সবুজ খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি আধুনিক জাতের ধান চাষে অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ও আগাছানাশক ব্যবহারের কারণে পশুখাদ্যের সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।’

কর্মশালায় আলোচকরা বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং নির্গমন হ্রাস একসঙ্গে নিশ্চিত করে ধান, দুধ ও মাংসের কম-কার্বন পণ্য হিসেবে বাজারজাতকরণ করলে দেশীয় কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি মূল্যে বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই ধরনের পণ্য ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে কৃষকের আয় ও জীবনমান বৃদ্ধি সম্ভব।’

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিতে নির্গমন হ্রাস, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং কার্যকর নীতিগত সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি।’

বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম গবেষণা সেন্টার (সিমিট) এবং কনসালটেটিভ গ্রুপ ফন ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকাল রিসার্চের (সিজিআইএআর) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালরাল স্পেশালিস্ট সন থান ভো, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিমিটের সিনিয়র এগ্রিকালরাল ইকোনোমিস্ট টি এস আমজাহ বাবু, গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জিন পেজমি।