চীনা অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত এগোচ্ছে, আসছে কারিগরি দল

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২২ পিএম
চীনা অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত এগোচ্ছে, আসছে কারিগরি দল

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের সহযোগিতা পেতে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। এই মেগা প্রকল্পের জন্য ঢাকা বেইজিংয়ের কাছে প্রায় ৫৫ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়েছে। প্রকল্পের বিষয়ে দুই দেশের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে খুব শিগগিরই চীনের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে এসে মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পটি যাচাই করবে।

সোমবার সকালে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে চীন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিষয়টি নিয়ে চীনা দূতাবাস ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কাজ করছে।

এ ছাড়া আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি, চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েও কথা হয়।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আরও জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রস্তাবিত বৈশ্বিক সুশাসন উদ্যোগে (জিজিআই) বাংলাদেশকে যুক্ত করার আগ্রহ রয়েছে বেইজিংয়ের। একইসঙ্গে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ৮০ কোটি ডলারের বেশি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর থেকেই তিস্তা প্রকল্প এগিয়ে নিতে উদ্যোগ নেয় সরকার। গত মে মাসে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়ে ঋণ সহায়তার কথা জানায়। পরে জুলাইয়ে ইআরডি চীনা দূতাবাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণ চেয়ে আবেদন করে।

‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ নামের এই মহাপরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫৫ কোটি ডলার আসবে চীনা ঋণ থেকে, বাকিটা সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। ২০২৬ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০২৯ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারতও। গত বছরের মে মাসে ঢাকা সফরে এসে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়েত্রা বিনিয়োগ প্রস্তাব দেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও প্রকল্পে ভারতীয় অর্থায়নের পক্ষে অবস্থান জানানো হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুলাইয়ে বলেছিলেন, চীন প্রস্তুত থাকলেও তিনি চান প্রকল্পটি ভারত বাস্তবায়ন করুক। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে ঋণচুক্তি দ্রুত সই করার দিকে নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ।