পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে ইউএনএইচসিআরের নবনিযুক্ত প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ


জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নবনিযুক্ত প্রতিনিধি ইভো ফ্রেইসেন বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।
ইউএনএইচসিআর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ফ্রেইসেন ও তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশে বর্তমানে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সুরক্ষা ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তাদের যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ সময় ইভো ফ্রেইসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য একাধারে সম্মান এবং সৌভাগ্যের বিষয় যে, দেশটি বহু বছর ধরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষদের উদারভাবে আশ্রয় দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে আমি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত শরণার্থীদের সুরক্ষা ও সহায়তায় ইউএনএইচসিআর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বৈশ্বিক সহায়তা ক্রমাগত সীমিত হয়ে পড়ায় এই সময়ে আমি আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা বজায় রাখতে এবং এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের স্থায়ী সমাধানের পক্ষে সমর্থন জানাতে মানবিক ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব।’’
নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ফ্রেইসেন সর্বশেষ লেবানন (২০২৩-২০২৫) এবং তার আগে ইরানে (২০১৮-২০২২) ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মানবিক খাতে তার কর্মজীবন তিন দশকেরও বেশি যেখানে তিনি ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ), ইউরোপীয় কমিশন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিওতে জ্যেষ্ঠ পদে নিয়োজিত ছিলেন।
এছাড়া তিনি দীর্ঘ সময় ইরাক, সুদান, মিসর ও সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে মানবিক সহায়তা, শরণার্থী সুরক্ষা ও জরুরি সহায়তা বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন।
২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে নিরাপত্তার খোঁজে আসতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশ উদারভাবে তাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। শরণার্থীরা এখনো নিরাপদে ফিরতে না পারায়, বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে ইউএনএইচসিআর তাদের সুরক্ষা, আশ্রয় এবং মৌলিক সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।