প্রকৌশলী শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব দিলে সমস্যার সমাধান করে দেব: জনপ্রশাসন সচিব

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
প্রকৌশলী শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব দিলে সমস্যার সমাধান করে দেব: জনপ্রশাসন সচিব

আন্দোলনরত প্রকৌশলী শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রস্তাব দিলে সচিব কমিটি তাদের সমস্যা সমাধান করে দেবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

তিন দফা দাবিতে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ মোড় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় বুধবার (২৭ আগস্ট) সারাদেশের প্রকৌশলীদের নিয়ে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ইতোমধ্যে আন্দোলনরত প্রকৌশলীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ে সচিব বলেন, 'তারা (আন্দোলনরত প্রকৌশলী) যদি তাদের দাবিগুলো স্মারকলিপি আকারে দেন, এগুলো নিয়ে তারা অনেক রিসার্চ করেছেন, তাদের কাছে আইন-কানুন আছে, এগুলো যদি অ্যাটাচ করে দেন, আমরা অল্প সময়ে এটা সমাধান করে দিতে পারব। আমাদের কাছে কোনো আবেদন আসেনি আমরা বিষয়টি শুনেছি। এখন আপনারা আমার কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করতেছেন।'

তাদের দাবি-দাওয়া আপনারা কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সঙ্গে পিএসসি (সরকারি কর্ম কমিশন) জড়িত, জনপ্রশাসন জড়িত, মন্ত্রিপরিষদ জড়িত, লেজিসলেটিভ বিভাগ বিভাগ জড়িত, আর যে সকল প্রকৌশলীরা যে মন্ত্রণালয় চাকরি করছেন ওই সব মন্ত্রণালয় জড়িত। সবার সঙ্গে বসে, এটাকে বলে অন্তঃমন্ত্রণালয় সভা, এর অফিসিয়াল একটা নাম আছে সচিব কমিটি, সেখানে এটা তুললেই সমাধান হবে, একটি বা দুটি মিটিং লাগবে। এটা সম্ভব, এটা এমন কোনো জটিল বিষয় নয়।'

মোখলেস উর রহমান বলেন, 'যারা ভুক্তভোগী তারা তাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রস্তাবটা আনবে। আমরা এটা ইতিবাচকভাবে (পজিটিভলি) দেখব, আমরা এটা ফেলে রাখবো না।'

তারা শাহবাগে বসে আছে এতে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'এই ভোগান্তি তো আমরা অফিসাররাও কম করিনি। কার কথা বলবেন!'

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা যেমন দাবি করছেন, অন্যদিকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরাও আন্দোলনে নেমে গেছে- বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, 'দুটিই তো সরকারের। বেসরকারি নিয়ে তো কোনো সমস্যা নেই। সরকারের সুবিধা যারা বেশি খায়, সমস্যা তারাই বেশি সৃষ্টি করে। এনারা যে প্রস্তাব নিয়ে আসতেছেন আমরা সমাধান করার জন্য প্রস্তুত। তাদের প্রস্তাব আসলে আমরা সবাইকে ডাকবো।'

তিনি বলেন, 'রাস্তাঘাট বন্ধ করার কোনো দরকার নেই, ইট ইজ নট ওয়াইজ। এই সরকারের আমলে আমরা কত রাস্তাঘাট বন্ধ করেছি- সেদিন একটা হিসাব দেখেননি? এরমধ্যে আমরা সরকারি লোকেরাই বেশি করেছি। (রাস্তাঘাট বন্ধ) জনসাধারণ কম করেছে।'

আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বা সচিব কমিটির সভা কবে করবেন- জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, 'যখন কাগজ আসবে আমরা প্লেস করব, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং তো আমরা যখন দরকার হয়, আমরা তখনই করি। এটার প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সব সচিবরা এটার সদস্য। এখানে নেগেটিভ কিছুই নেই। শুধু এটা না বুঝে যারা করতেছে, আপনাদের যদি সুযোগ হয় তাদের বোঝান- তোমরা যা চাও সেটা সুন্দর করে বুঝিয়ে মিনিস্ট্রিতে লিখে জায়গামতো দিয়ে আসো, সমাধান হয়ে যাবে।'

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিনদফা দাবির মধ্যে রয়েছে- নবম গ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং পদ বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে প্রবেশের জন্য সকলকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীর কমপক্ষে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এমনকি বিভিন্ন নামে সমমানের পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।

দশম গ্রেডের কারিগরি পদ বা উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি না থাকলেও ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা ৬ মাস ধরে দাবি জানিয়ে এলেও সরকার এসব দাবি পূরণে কাজ করেনি। সরকার তাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।