১ হাজার ১ টাকায় মসজিদ ও মন্দিরকে জমি দিল রেলওয়ে


রেলওয়ে রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় অবস্থিত দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরকে প্রতীকী মূল্যে জমি হস্তান্তর করেছে। তিনটি ধর্মীয় উপাসনালয়ের প্রতিটির জন্য ১ হাজার ১ টাকা হারে মোট ৩ হাজার ৩ টাকার বিনিময়ে এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ের ইতিহাসে এটি প্রথম।
আজ বুধবার রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন আরিফ সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটির নিকট বরাদ্দপত্র তুলে দেন। এতে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে, খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ পেয়েছে ০.২০১১ একর (৮,৭৬০ বর্গফুট) ; আন-নূর-জামে মসজিদ ০.০৫৫২ একর (২,৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির পেয়েছে ০.০৫৬২ একর (২,৪৫০ বর্গফুট) জমি।
সব মিলিয়ে, মোট প্রায় ৩১ শতাংশ জমি তিনটি উপাসনালয়কে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রেলওয়ের এই উদ্যোগকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায়, তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদখল হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারেও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ।’ তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না এবং তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রেলওয়ের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রেলওয়ের আইনে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়ার কোনো বিধান ছিল না। তবে এই আইনকে কিছুটা পরিবর্তন করে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য স্থায়ীভাবে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তবে অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। কারণ, যেকোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এই দৃষ্টান্তকে ব্যবহার করে বাজার মূল্যের বাইরে জমি বরাদ্দের আবেদন করতে পারে। এ বিষয়ে একটি সুচিন্তিত নীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন। যদিও রেল উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভবিষ্যতে রেলওয়ের জমি পেতে হলে বাজার মূল্যেই নিতে হবে।