কারাগারে একসঙ্গে ফুটবল খেলেন ব্যারিস্টার সুমন ও সালাম মুর্শেদী

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৬ জুন ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
কারাগারে একসঙ্গে ফুটবল খেলেন ব্যারিস্টার সুমন ও সালাম মুর্শেদী
ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক হত্যা মামলায় ৫ আগস্টের পর থেকে কারাগারে আছেন ব্যারিস্টার সুমন ও সালাম মুর্শেদী। তারা দুজনই বর্তমানে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এ ভিআইপি মর্যাদায় রয়েছেন। কারাগারে এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে নিয়মিত ফুটবল খেলেন ব্যারিস্টার সুমন।

জানা যায়, প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দুটি দলে ভাগ হয়ে ফুটবল খেলেন তারা। কারাগারের বাইরে গুলশানে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা একটি বাড়ি নিয়ে রিট দায়ের করেন সুমন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।

কারাগারে তাদের নিয়মিত ফুটবল খেলার বিষয়টি  জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সহকর্মী ও চেম্বার পার্টনার এম লিটন আহমেদ। তিনি ও সুমনের পরিবারের সদস্যরা কারাবিধি মেনে দেখা করেন বলেও জানান তিনি।

লিটন আহমেদ বলেন, বাইরে দ্বন্দ্ব থাকলে কি হবে কারাগারে একসঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কারণ তারা দুইজন বৈষম্যবিরোধী মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

কারাসূত্রে জানা গেছে, কারাগারে আসামিরা শরীরচর্চা ও খেলা-ধুলার সুযোগ পান। সকালে বা বিকেলে যে যার ইচ্ছে মতো শরীর চর্চা ও খেলাধুলা করতে থাকেন। আর ব্যারিস্টার সুমন ও সালাম মুর্শেদীরা প্রতিদিন আসরের নামাজের পর দুটি দলে ভাগ হয়ে ফুটবল খেলেন। এক সময় বাফুফের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। ফুটবল ফেডারেশনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। যার জেরে সালাম মুর্শেদীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গণ্য করা হতো তাকে।

কারা সূত্র বলছে, ফুটবল খেলার ছলে প্রায়ই তারা মাঠে একজন আরেকজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে যান। উদ্দেশ্যমূলকভাবে মারা হয় পায়েও। এরই মধ্যে একদিন ব্যারিস্টার সুমনের পা বরাবর ফাউল করেন সালাম মুর্শেদী। পরে সালাম মুর্শেদীকে উদ্দেশ্য করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বুড়ো বয়সে পা নিয়ে সাবধানে ফাউল করেন। না হলে হাড় ভেঙে যাবে।

গত ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ব্যারিস্টার সুমন ও সালাম মুর্শেদী। তারা দুজনই বর্তমানে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এ আছেন। সুমনের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদাভাবে করা মামলায় বিচারিক আদালতের পর উচ্চ আদালতের জামিন চাইলেও কোনো আদালতে এখনো জামিন হয়নি এবং সালাম মুর্শেদীরও জামিন হয়নি।

ঢাকার গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত যে বাড়িটি সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী দখলে রেখেছেন তা ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তি’ বলে এক আদেশে উল্লেখ করেছিলেন হাইকোর্ট। এ সম্পত্তি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে সালাম মুর্শেদীকে ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও অবমুক্তকরণ ছাড়াই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে মিথ্যা রেকর্ডপত্র তৈরি এবং পরবর্তীতে হস্তান্তর অনুমতি ও নামজারি অনুমোদন করার মাধ্যমে রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কের ২৭/বি নম্বর বাড়িটির মালিক হয়ে যান সালাম মুর্শেদী।