আন্দোলনে স্থবির রাজধানী, চারপাশে যান চলাচল বন্ধ


ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ ও মৎসভবন থেকে চলাচলকারী রাজধানীর অন্যান্য সড়ক। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মমুখী ও গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষ।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে পল্টন, শাহবাগ, বিজয় সরণিসহ আশেপাশের কয়েকটি সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বেলা ১১টায় এ অবরোধ করেন তারা। এর আগে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবনের আশেপাশে জড়ো হতে থাকেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর পল্টন থেকে শুরু করে শাহবাগমুখী এবং মৎস ভবন থেকে শাহবাগ, পল্টন- গুলিস্তানমুখী সম্পূর্ণ সড়কে বন্ধ আছে যান চলাচল। গণপরিবহনের চালকরা যানবাহন বন্ধ করে বসে আছেন। অধিকাংশ গাড়ি থেকে যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন।
মৎস ভবন ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইশরাকের শপথের দাবিতে খণ্ড থণ্ড মিছিল আসার কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছেন। কোনও কোনও গণপরিবহন আবার যাত্রী নামিয়ে দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে।
এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রতিদিন এমন সড়ক অবরোধের কারণে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কাজে এলেও দিন শেষে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ফলে গাড়ির মালিককে খরচের টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গুলিস্থান থেকে মিরপুরগামী মবিনুল ইসলাম বলেন, ‘এক ঘণ্টার ওপরে একই স্থানে গাড়িতেই বসে আছি। গাড়ির চাকা ঘুরছেই না। এত যানজট যে নেমে হেঁটে সামনে গিয়ে গাড়িতে উঠবো সে উপায়ও নেই। পুরা রোড বন্ধ, কোনও গাড়িই যাতায়াত করতে পারছে না।’
শাহবাগ থেকে পায়ে হেঁটে পল্টনের দিকে যাচ্ছেন মো. রশিদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিটা দিন আন্দোলন আর সড়ক অবরোধ ভালো লাগে না। এভাবে কী রাস্তায় চলাচল করা যায়? যেদিনই আন্দোলন হয় সেদিনই ঠিক টাইমে অফিসে যেতে পারি না। এভাবে প্রত্যেক দিন যদি আন্দোলন আর রাস্তা বন্ধ করা হয় তাহলে আমরা কীভাবে চাকরি করবো?’
মৎস ভবন মোড়ে যানজটে আটকে আছেন বাসচালক তানভীর হাসিব। তিনি বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা ধরে গাড়ি নিয়ে আটকে আছি। সকাল থেকে মাত্র একটা ভাড়া মারতে পেরেছি। তারপর থেকেই যানজটে আটকা। আজ খালি হাতেই ফিরতে হবে। এভাবে গাড়ি বন্ধ করে কতক্ষণ বসে থাকবো?’
রমজান পরিবহনের হেলপার আজিজ মিয়া বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করে প্রতিদিনই আন্দোলন করছে। আমরা কোথায় যাবো, আমাদের দোষ কী? আমাদের গাড়ি চালাতে দেন। সারাদিন এভাবে আটকে থেকে দিন শেষে মালিককে দেওয়ার টাকা হয় না। আমাদেরও তো পরিবার আছে। আমরা কীভাবে চলবো।’