গণঅভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার ব্যর্থ: ফরহাদ মজহার


বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে যেমন প্রত্যাশা করেছেন, তেমন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে যে সরকার এসেছে। আমরা মনে করি, এই সরকার আমরা যেমন করে প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন করে হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।”
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শহরের গরিব শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিনামূল্যে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশুদ্ধ নিরাপদ পানির দাবিতে যৌথভাবে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে “ভাববৈঠকি”, “জুলাই কমিউনিটি এলায়েন্স মিরপুর” ও “গণঅভ্যুত্থান সুরক্ষা মঞ্চ”।
ফরহাদ মজহার বলেন, “আমরা ড. ইউনূসকে বলতে চাই, তার যে সীমাবদ্ধতা এবং বাংলাদেশের রাজনীতির যে সীমাবদ্ধতা, এটা আমরা বুঝতে পারি এবং আমরা তার সঙ্গে ১০০% রয়েছি। কিন্তু কিছু কিছু কাজ তাকে অবিলম্বে শুরু করতে হবে। এইখানে আপনার কোনো রকম টালবাহানের সুযোগ নেই।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নে নীতির গোড়ায় থাকবে পানি। কারণ পানি আমাদের জীবন রক্ষা করে। কোম্পানির হাতে পানির অধিকার তুলে দেওয়ার অধিকার সরকারের নাই। সরকারকে আমরা সহযোগিতা করবো, যেন ঢাকা শহরের মানুষ বিনা পয়সায় সুপেও পানি পায়। বিনা পয়সায় পানি পাওয়ার অধিকার শহরের জনগণের রয়েছে। বিনা পয়সায় সুপেয় পানি পাওয়া জনগনের অধিকার। যারা সুপেয় পানি বিভিন্নভাবে নষ্ট করছে, এদের ক্রিমিনালের আওতায় ফেলে দিতে হবে।”
অবিলম্বে “পানি কমিশন” গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “সুপেয় পানির নিশ্চয়তার দিতে হবে। সুপেয় পানি দেওয়ার মাধ্যমে এই সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে, তারা কোনো ফ্যাসিস্টের আওতায় পড়ে নাই।”
পানির দাম বিভিন্ন দেশে জ্বালানির দামের চেয়েও বেশি, দুধের দামের চেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সম্পদ সুরক্ষার মধ্য দিয়ে আমরা তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে যেকোনো ধনী দেশের কাতারে পৌঁছাতে পারি। এটা আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ। ফলের সুপেয় পানি যাঁরা নষ্ট করছেন বিষ দিয়ে, বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য নদীতে–সাগরে ফেলে, এদের ক্রিমিনাল (অপরাধী) হিসেবে গণ্য করতে হবে। এর জন্য অবিলম্বে আমাদের ফৌজদারি আইন দরকার এবং যেসব বিষ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ, পানি নষ্টের জন্য দায়ী, সেই সব বিষ বন্ধ করার নির্বাহী আদেশ আমরা চাই।”
মানববন্ধন ও গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রিকশাচালক স্বপন মিয়া, উবিনীগের গবেষক সীমা দাস, লেখক ও প্রকৌশলী সাদিক মোহাম্মদ আলম, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব প্রীতম দাশ, সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মেজর (অব.) আহমেদ ফেরদৌস, অধিকারকর্মী জাহিদুল ইসলাম, ছাত্র সমন্বয়ক ফরহাদ হোসেন, গণ আকাঙ্ক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুল মজিদ প্রমুখ।