বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়তে পারে: খাদ্য উপদেষ্টা


খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ‘ধান-চাল ক্রয় নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট আর হবে না, হতে দেবে না সরকার। কৃষকের স্বার্থে বিগত বছরের চেয়ে কেজিতে চার টাকা বেশি দামে ধান-চাল ক্রয় করছে সরকার। সরকারের বেশি দামে কেনার কারণে বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়বে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিগত আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে কোনো সিন্ডিকেট ছিলো না, বোরো সংগ্রহেও কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। বিগত সরকারে আমলে কি হয়েছে, না হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এখন কোনো সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব থাকবে না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারি সভার মাধ্যমে অনেক বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করে ধান চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কৃষকরা যেন ধানের ন্যায্য দাম পান সেদিকে বেশি লক্ষ্য রাখে সরকার। দেশের উত্তরাঞ্চল খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত, সেখানে ধান কাটা আরও ১৫ দিন পরে শুরু হবে। কিন্তু হাওড় এলাকায় ধানকাটা শুরু হয়ে গেছে। তাই সরকার দ্রুত মিটিং করে ধান চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।’
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারিভাবে ধান চালের দাম নির্ধারণ না করা হলে মধ্যস্বত্বভোগী ভোগী ব্যবসায়ীরা কম দামে কৃষকের ধান কিনে নেবে তাই সরকারিভাবে ধান চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি ধান ও চালের দাম গেল বারের চেয়ে চার টাকা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে কৃষক লাভবান হবেন।’
সরকার প্রতিকেজি ধান ৩৬ টাকা ও চাল ৪৯ টাকা কেজি দরে কিনবে জানিয়ে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বাজারে চালের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে। কৃষক পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করে তাদের উপযুক্ত মূল্য দিতে না পারলে কৃষক ধান চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। সিলেট বিভাগ থেকে আতপ সিদ্ধ চাল দুটোও সংগ্রহ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশে আতপ চালের জন্য কোথাও বরাদ্দ দেয়া হয়নি, কিন্তু সিলেট বিভাগে দেয়া হবে। গেলবার ১৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছিলো এবার ১৪ লাখ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হবে। গেল বার তিন লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছিলো এবার সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন সংগ্রহ করা হবে। যে জেলায় ধান সংগ্রহ কম হবে সে জেলার বরাদ্দ করা ধান সুনামগঞ্জ থেকে কেনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিসি ফুডের সে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন: জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ন কবীর, জেলা চাল কল মালিক সভাপতি জিয়াউল হক, শান্তিগঞ্জ ওসি এলএসডি মো. আব্দুল আহাদ প্রমুখ।
উপদেষ্টা সরাসরি কৃষক ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে হাওড়ের ফসল ও বাঁধসহ হাওড়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করেন। পরে তিনি হাওড়ে ধানকাটার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।