জুলাই ঘোষণাপত্রে সর্বত্রই অভ্যুত্থান, কোথাও বিপ্লব নেই: মাহমুদুর রহমান


জুলাই ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র পড়লে দেখা যায়, সেখানে সর্বত্রই অভ্যুত্থান, কোথাও বিপ্লব নেই। এই সরকারই তো স্বীকার করছে না যে এটা বিপ্লব হয়েছে। এই সরকারই মনে করে এটা বিপ্লব হয়নি, এটা অভ্যুত্থান হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সেন্টার ফর সিভিল রাইটস’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি সম্ভবত অক্টোবর মাসে বলেছিলাম—অন্তর্বর্তী সরকার এখনও নাম পরিবর্তন করে এটাকে বিপ্লবী সরকার করতে পারেন। তারা করেনি। এই জন্যেই আজ পর্যন্ত এই বিতর্ক চলছে—এটা বিপ্লব, অভ্যুত্থান, রেভল্যুশন না আপরাইজিং। এটা আসলে কী?
তিন বলেন, সব থেকে মজার কথা হলো, আমরা যে জুলাই ডিক্লারেশন দেখলাম সেখানে বারে বারে অভ্যুত্থান বলা হয়েছে। জুলাই ডিক্লারেশন যদি পড়লে দেখা যায়—সর্বত্র অভ্যুত্থান, কোথাও বিপ্লব নেই।
জাতীয় সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেকেই সংসদের উচ্চকক্ষ নিয়ে খুব উত্তেজিত। উচ্চকক্ষের মাধ্যমে আপনি ফ্যাসিস্ট আটকাতে পারবেন? উচ্চকক্ষ তো পাশের ভারতেও আছে। এর কাজটা কী? আপার চেম্বারে কাজ হচ্ছে পুরস্কৃত করা। মানে রাজনৈতিক দলগুলো যাদের এমপি বানাতে পারে না তাদের পুরস্কৃত করাটাই হচ্ছে আপার চেম্বারের কাজ। দালাল বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, মিডিয়া পারসোনালিটি—তাদের পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, খসড়াটি কোনও সাধারণ মানুষের পক্ষে পড়ে তা বোঝা অসম্ভব। যে বিপ্লবে একজন রিকশাচালক, একজন গ্রামের কৃষকের সন্তান, শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেছে তাদের আকাঙ্ক্ষার এক্সপ্রেশন কোথায় জুলাই ডিক্লারেশনে? তারা এটা পড়ে কী বুঝবে? এত লম্বা একটা ডকুমেন্টের প্রয়োজন ছিল কিনা? কেন এত লিগালিস্টিক করা হয়েছে? সাধারণ মানুষের পক্ষে এর মর্ম উদ্ধার করা অসম্ভব। আমি এর অর্ধেক বুঝতে পারি না।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন বানচাল করার জন্য ভারত চেষ্টা করবে— এটা মাথা রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যেও ভারতীয় এজেন্ট কাজ করছে। দিল্লিতে ষড়যন্ত্র চলছে, স্যাবোটাজ হতে পারে।
বিচারপতি এফ এম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক, সেন্টার ফর সিভিল রাইটসের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পারভেজ হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশীদ প্রমুখ।