পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের গ্রামগুলোতে ঢুকে লুটপাট চালিয়েছে ইহুদিরা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের গ্রামগুলোতে ঢুকে লুটপাট চালিয়েছে ইহুদিরা

পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের গ্রামগুলোতে ঢুকে বসতবাড়ি, দোকানপাটে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইহুদিরা। এ সময় গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) দিনের শেষভাগে পশ্চিমতীরে হানা দিয়ে সহিংসতায় মেতে ওঠে তারা।

এর আগে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের ওপর আরোপ করা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলা ও সংঘাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে ইসরাইলকে উদারভাবে সমর্থন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবারও তাকে ঘিরে যেসব সহযোগী রয়েছেন, তাদের সবারই ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ বসতিস্থাপনে সমর্থন রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ট্রাম্পকে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসান দখলদার নেতারা। বছরখানেক আগে অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের ওপর যখন বাইডেন নিষেধাজ্ঞা দেন, তখন গাজা যুদ্ধঘিরে ব্যাপক সহিংসতা চলছিল। পরে মৌলবাদী ও কট্টরপন্থি ইসরাইলিদেরও নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে।

বাইডেনের নিষেধাজ্ঞাকে ভয়াবহ বিদেশি হস্তক্ষেপ আখ্যায়িত করে ইসরাইলের প্রতি অবিচল ও আপসহীন সমর্থন দেওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মোট্রিচ।

পশ্চিমতীরের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে এমনিতেই ইসরাইলের প্রকাশ্য সামরিক শাসনের অধীনে বসবাস করতে হচ্ছে। ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ডকে ইসরাইলের সঙ্গে একীভূত করতে চান বেজালের মতো উগ্রপন্থি ইসরাইলিরা।

তারা গাজা উপত্যকায়ও অবৈধ বসতি নির্মাণ করতে চান। ইসরাইলিদের এই দখলদারিত্বকে অবৈধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হিসেবে বিবেচনা করে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। পশ্চিমতীরে পাঁচ লাখ অবৈধ বসতিস্থাপনকারী আছে, যারা ইসরাইলের নাগরিক।

জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ট্রাম্প বেছে নিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান সদস্য এলিস স্টেফ্যানিককে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কংগ্রেসের শুনানিতে তিনি বলেন, ইসরাইলকে বাইবেল অধিকার দিয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করতে।

জিনসাফুত ও আল-ফুনদুক এলাকার কর্মকর্তারা বলেন, গেল সোমবার ফিলিস্তিনিদের অন্তত দুটি গ্রামে হানা দিয়ে বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে এবং তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে মুখোশপরা কয়েক ডজন অবৈধ বসতিস্থাপনকারী।

তাদের হামলায় আহত ১২ ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসা দিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, ‘হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।’

গাজাযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমতীরে ইসরাইলিদের সহিংসতা বেড়েছে। তবে এসবের সঙ্গে ট্রাম্পের অভিষেকের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা; তা পরিষ্কার না। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জেনিন শরণার্থী শিবিরে প্রাণঘাতী অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল।

জিনসাফুত গ্রামের কাউন্সিল প্রধান জালাল বশির বলেন, ‘মুখোশধারীরা তিনটি বাড়ি, একটি নার্সারি ও একটি কাঠমিস্ত্রির দোকানে হামলা চালিয়েছে। এগুলো সবই গ্রামের প্রধান সড়ক লাগোয়া অবস্থিত।

আল-ফুন্দুক গ্রামের স্থানীয় কাউন্সিলের প্রধান লাওয়ি তায়েম বলেন, কয়েক ডজন দখলদার এসে গুলি করেছে, পাথর ছুড়েছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছ এবং দোকান ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়েছে।

‘তারা মাস্ক পরা ছিল, আর হাতে ছিল অগ্নিসংযোগের সরঞ্জামাদি। হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল অনেক বেশি এবং নজিরবিহীন।’