পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৯ এএম
পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক

ক্রমাগত চাপ ও বিতর্কের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক (৪২)। গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাগনি মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক নিয়ে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি যুক্তরাজ্যে খবরের শিরোনাম হয়ে আসছিলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করলেও ভুল কিছু করেননি বলে দাবি করেন।

গেল সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা আছে।’ তবে দুই মাসের মধ্যে সরকারের দ্বিতীয় কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা কিয়ার স্টারমারের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গেল বছরের জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে লেবার পার্টি ক্ষমতার আসার পর কিয়ার স্টারমারের জনপ্রিয়তায়ও ধস নেমেছে।

ট্রেজারি মিনিস্টার হিসেবে অর্থপাচারের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব ছিল টিউলিপের। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার অর্থনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে তদন্তে যদিও কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলেনি, কিন্তু তার অবস্থানের কারণে সরকারি কাজ থেকে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হতে পারে। আর এ কারণেই মন্ত্রীত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির পেনশন বিষয়ক মন্ত্রী এমা রেনল্ডসকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত চলছে।

বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত থেকে অর্থ পাচারে শেখ হাসিনার পরিবার জড়িত কিনা, সেই তদন্তের মধ্যেই গেল ডিসেম্বরে টিউলিপের নাম উঠে আসে। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। তার ওই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম।

টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতা। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর, সম্পাদকীয় প্রকাশিত হতে থাকে।

এর মধ্যে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সম্পত্তি টিউলিপের ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এই প্রেক্ষাপটে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি (রেফারেল) লিখেছিলেন। মন্ত্রীদের আচার-আচরণ, নীতিনৈতিকতা বিষয়ে ম্যাগনাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে থাকেন। ওই তদন্ত চলার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক।