জাপানের ইতিহাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হলো টুনা, প্রতি কেজি কত পড়ল
জাপানের রাজধানী টোকিওতে নীল পাখনার একটি টুনা মাছ ১৩ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে জাপানের আমোরি অঞ্চলের ওমা উপকূল থেকে ধরা হয় এই টুনা মাছ।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টোকিওর তয়োসু বাজারে আজ রোববার ভোরে ২৭৫ কেজির টুনা মাছটি নিলামে কিনে নিয়েছে অনোদেরা গ্রুপের মালিকানাধীন একটি সুশি রেস্তোরাঁ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাপানের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া টুনা মাছ এটি।
টোকিওর তয়োসু বাজার বিশ্বের বৃহত্তম পাইকারি মাছবাজারগুলোর একটি। প্রতিবার নতুন বছরের শুরুতে প্রথম নিলামে চোখধাঁধানো দামে টুনা মাছ বিক্রির রীতির কারণে আলোচনায় আসে এই বাজার।
২০২৫ সালের শুরুতে ২৭৫ কেজির টুনা মাছটির প্রতি পাউন্ডের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০০ ডলার, বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
ওমা অঞ্চলের এই টুনা ‘কালো হিরা’ নামেও পরিচিত। বিচিত্র খাদ্যাভ্যাস ও ঠান্ডা পানির পরিবেশে বেড়ে ওঠায় এই টুনা মাছের চর্বি ও স্বাদ অন্য প্রজাতির টুনা থেকে ব্যতিক্রম। এই মাছ ধরার ক্ষেত্রেও রয়েছে অদ্ভুত পদ্ধতি। টানা জাল নয়, বরং দড়ি বাঁধা বর্শা দিয়ে ঐতিহ্যবাহী কৌশলে ধরা হয় এই টুনা।
২০১৭ সালে অতিরিক্ত শিকারের কারণে নীল পাখনা টুনার সংখ্যা ৩ শতাংশে নেমে আসে। এরপর আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে টুনা শিকারের ওপর কঠোর কোটা আরোপ করা হয়। এই চুক্তিতে টুনা মাছ ধরার ক্ষেত্রে জাপানের বিশেষ অধিকার ছিল।
২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, টুনার সংখ্যা আগের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়েছে; যা ২০৩৪ সাল পর্যন্ত নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মেরিন ফিশারিজ সার্ভিস (এনওএএ) জানিয়েছে, শিকার সীমিত করার ফলে প্রজনন বেড়েছে।
তবে টুনা মাছের এই নিলাম শুধু উচ্চ মূল্যের জন্য নয়, বরং জাপানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বছরের শুরুতে এই ধরনের বড় টুনা মাছকে সৌভাগ্য এবং সাফল্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।