যৌথ প্রতিরক্ষা গড়ার পথে হাঁটছে ইউরোপ


রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হামলা প্রতিরোধে যৌথ প্রতিরক্ষা গড়ার পথে হাঁটছে ইউরোপ। ইইউ নেতারা ড্রোন আক্রমণ ও আকাশ পথের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ‘ড্রোন ওয়াল’ তৈরির পরিকল্পনা সামনে এনেছেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের ক্রিশ্চিয়ানসবার্গ ক্যাসেলে ডেনিশ পার্লামেন্টে এক সম্মেলনে যোগ দেন।
রোমানিয়া এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা ড্রোন কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। বৈঠকে ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা ও রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এদিকে ইউক্রেনজুড়ে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। নতুন গ্রাম দখলের দাবি করেছে রুশ সেনারা।
বুধবার (১ অক্টোবর) কোপেনহেগেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বৈঠক করেন। সেখানে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকাতে ২০৩০ সালের মধ্যে যৌথ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ে তোলার প্রস্তাব তোলা হয়। বৈঠকে অংশ নেন ইইউ’র ২৭ দেশের নেতারা।
আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা ও আকাশসীমা অনুপ্রবেশ, ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা এবং স্থগিত রুশ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা। ভিডিও লিঙ্কে ভাষণ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন ঘোষণা দেন, ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার জন্য রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদকে কাজে লাগানো হবে।
বৈঠকে নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনায় আসে ‘ড্রোন ওয়াল’ নির্মাণ পরিকল্পনা। রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সীমান্তজুড়ে সমন্বিত প্রতিরক্ষা জাল গড়ে তুলতে চায়। রোমানিয়া এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা ড্রোন কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে ন্যাটোর সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ইউক্রেনজুড়ে হামলা আরও জোরদার করেছে। দোনেৎস্ক অঞ্চলে নতুন একটি গ্রাম দখলের দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে ব্যাপক লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। এতে কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।
এদিকে জাপোরিজঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে চলমান গোলাবর্ষণের জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ এখনও সচল হয়নি। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা জানিয়েছে, রিঅ্যাক্টর ঠাণ্ডা রাখতে এখনও জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারে কাজ চলছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় রাশিয়ার হামলা শুধু ইউক্রেন নয়, গোটা মানবজাতির জন্য হুমকি। সম্প্রতি পোল্যান্ড, রোমানিয়া ও এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনায় ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বাড়িয়েছে। এ বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপ এখন রাশিয়ার মুখোমুখি অবস্থান করছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, রাশিয়ার ছায়া নৌবহর ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে শত শত জাহাজের মাধ্যমে তেল রফতানি করছে। এতে রাশিয়ার বাজেটে বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো যুক্ত হচ্ছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধ খরচের প্রায় ৪০ শতাংশ জোগায়। তিনি বলেন, এই নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য জরুরি।