ইসরায়েলি হামলায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে মার্কিন শিশুসহ নিহত ৫


ইসরায়েলের এক ড্রোন হামলায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বেন্ট জবেইল শহরে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনই শিশু। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, রবিবারের (২১ সেপ্টেম্বর) এই হামলায় একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়ি লক্ষ্য করা হয়। এতে আরও দু’জন আহত হন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে কার্যকর হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল তার প্রতিবেশী দেশকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি জানান, নিহত তিন শিশু—সেলিন, হাদি ও আসিল—এবং তাদের বাবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। হামলায় শিশুদের মা আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই হামলায় হিজবুল্লাহর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে স্বীকার করেছে যে বেসামরিক লোকজনও নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল প্রায়ই দাবি করে যে, তারা দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যাতে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠী পুনরায় সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে না পারে। ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধের সময় গোষ্ঠীর বেশিরভাগ শীর্ষ নেতৃত্ব নিহত হয়েছিল, যার মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রধান হাসান নাসরাল্লাহও ছিলেন।
এনএনএর বরাত দিয়ে স্পিকার নাবিহ বেরি প্রশ্ন তোলেন, “লেবাননের শৈশব কি ইসরায়েলি সত্ত্বার জন্য অস্তিত্বের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে? নাকি এই সত্ত্বার আচরণ—যেখানে বিনা বাধায় ও জবাবদিহিতা ছাড়াই হত্যা করা হয়—আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রকৃত হুমকি?”
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম ইসরায়েলকে নতুন হত্যাযজ্ঞের জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
নওয়াফ সালাম আগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘যা ঘটেছে তা বেসামরিকদের বিরুদ্ধে একটি নগ্ন অপরাধ এবং আমাদের জনগণকে ভয় দেখানোর বার্তা, যারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতের পর দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামে ফিরে এসেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক প্রস্তাবনা ও আন্তর্জাতিক আইন বারবার লঙ্ঘনের জন্য কঠোরতম ভাষায় নিন্দা জানাতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবসহ লেবাননে হিজবুল্লাহ-বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে শিয়া মুসলিম গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্র করার চাপ দিচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে লেবাননের সেনাবাহিনী মন্ত্রিসভায় একটি পরিকল্পনা পেশ করেছে, যেখানে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার প্রস্তাব রাখা হয় এবং জানানো হয় যে সেনাবাহিনী এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করবে।
তবে হিজবুল্লাহ দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা তাদের অস্ত্র ধরে রাখবে। গোষ্ঠীর দাবি, ইসরায়েল যতদিন লেবাননে হামলা চালাচ্ছে ও দক্ষিণাঞ্চলের অংশ দখল করে রেখেছে, ততদিন নিরস্ত্র হওয়া গুরুতর ভুল হবে।