নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথের দিনেই বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স


ফ্রান্সে নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর শপথ গ্রহণের দিন ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ‘ব্লকোঁ তু’ (চলুন সবকিছু অবরোধ করি) নামে এক তৃণমূল আন্দোলনের ডাকে দেশজুড়ে সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সপ্তাহের শুরুতে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ফ্রাঁসোয়া বাইরু পদত্যাগ করেন। তার পরই প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘনিষ্ঠ লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নতুন সরকারকে ঘিরে ক্ষোভের বিস্ফোরণ দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীরা রাজধানী প্যারিসসহ মার্সেই, বোর্দো ও মন্টপিলিয়েতে জড়ো হন। গারে দ্য নর্দ ট্রেন স্টেশনের বাইরে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মুখোশ ও হুড পরা অনেকেই ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইও জানিয়েছেন, মধ্য সকাল পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রেন শহরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং তুলুজের কাছে বিদ্যুতের তারে নাশকতা চালানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই ম্যাক্রোঁ ও লেকর্নুর পদত্যাগ দাবি করেন। পাশাপাশি গাজায় চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধেও স্লোগান তোলা হয়। আন্দোলনের মূল দাবি হলো সরকারি সেবাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উচ্চ আয়ের ওপর কর আরোপ, ভাড়া স্থগিতকরণ এবং প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ।
‘ব্লকোঁ তু’ নামের এ আন্দোলন কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গড়ে ওঠে। গ্রীষ্মকাল থেকেই তা গতি পায়। ওই সময় বাইরুর ৪৪ বিলিয়ন ইউরোর বাজেট কাটছাঁটের বিরুদ্ধে মানুষকে রাস্তায় নামতে উৎসাহিত করা হয়।
এক তরুণ বিক্ষোভকারী বলেন, পড়েছি ম্যাক্রোঁ যেভাবে ফ্রান্সের ঋণ সমস্যার সমাধান করছেন তাতে আমরা ক্লান্ত হয়ে এখানে এসেছি। নতুন প্রধানমন্ত্রীও একই চক্র ফিরিয়ে আনবেন।
লেকর্ন ফ্রান্সের গত দুই বছরের মধ্যে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। শপথের পর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সংকটের এই সময়ে সংযম ও নম্রতা দরকার। তিনি বিরোধী দল ও ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে তাৎক্ষণিক আলোচনা শুরু করার ঘোষণা দেন।
ফ্রান্সের ঘাটতি এখন জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। গভীরভাবে বিভক্ত জাতীয় পরিষদে বাজেট নিয়ে সমঝোতা করাই হবে লেকর্নুর প্রধান চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যে বামপন্থি ফ্রান্স আনবাউড দল নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকি দিয়েছে। তবে এ নিয়ে অন্যান্য দলের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।