ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকের পরই ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন হামলা


ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পদক্ষেপ নিতে ওয়াশিংটনে ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপী নেতাদের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিনভর কয়েক দফা বৈঠক শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ইউক্রেনে ব্যাপক ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতভর ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় এলাকায় ২৭০টি ড্রোন ও অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে মস্কো।
ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় নেতা এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে বৈঠক করার কয়েক ঘণ্টা পরই এই হামলার খবর পাওয়া গেল। সোমবার দিনবর বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন শুরু করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় এবং ইউক্রেনের জেলেনস্কির সাথে খুব ভালো বৈঠকের পর তিনি পুতিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে পুতিনকে অবহিত করেছেন বলেও জানান ট্রাম্প। এর আগে গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সাথে বৈঠক করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বলেন, ‘আলোচনার শেষে আমি পুতিনকে ফোন করেছি এবং পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বৈঠকের কাজ শুরু করেছি।’
ট্রাম্পের এমন আশ্বাসের পরও রাশিয়ার হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটিরপোলতাভা অঞ্চলের মেয়র ভিতালি মালেটস্কি টেলিগ্রামে বলেন, ‘ঠিক যেই সময় পুতিন ট্রাম্পকে ফোনে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি শান্তি চান। একই সময়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের সাথে ন্যায্য শান্তির বিষয়ে আলোচনা করছিলেন, তখন পুতিনের সেনাবাহিনী ক্রেমেনচুকে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব আবারও দেখেছে যে পুতিন শান্তি চান না - তিনি ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে চান।’
মালেটস্কি আরও বলেন, জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো লক্ষ্য করে মস্কোর হামলার পর অসংখ্য বিস্ফোরণে শহর কেঁপে ওঠে। এর ফলে পোলতাভা অঞ্চলের শত শত মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তারা ২৩০টি ড্রোন এবং ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। এছাড়া অন্তত ১৬টি স্থানে হামলা রেকর্ড করেছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলায় অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কার এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া।