থাইল্যান্ডে গাঁজা কিনতে লাগবে প্রেসক্রিপসন!

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:২৭ জুন ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
থাইল্যান্ডে গাঁজা কিনতে লাগবে প্রেসক্রিপসন!

থাইল্যান্ডে আবারও গাঁজার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। এখন থেকে, দেশটিতে গাঁজা কিনতে প্রয়োজন হবে প্রেসক্রিপসন বা ডাক্তারি ব্যবস্থাপত্র।

এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ২০২২ সালে গাঁজা বৈধ করে আলোড়নের সৃষ্টি করেছিল থাইল্যান্ড। এতে দেশটির পর্যটন ও কৃষি খাতে নতুন দিগন্ত খুলে যায়। তবে শিশুদের মধ্যে আসক্তি ও অনিয়ন্ত্রণ কেনাবেচা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে দেশটি।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুযায়ী, গাঁজা নিয়ন্ত্রণে আবারও কঠোর হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে থাইল্যান্ড সরকার।

গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক থেপসুয়েতিন এক আদেশের মাধ্যমে সব দোকানে প্রেসক্রিপশন ছাড়া গাঁজা বিক্রি নিষিদ্ধ করেন। এ ছাড়া, গাঁজা ফুলকে ‘নিয়ন্ত্রিত ভেষজ’ হিসেবে পুনরায় শ্রেণিকরণের প্রস্তাব দেন তিনি।

বুধবার (২৫ জুন) দেশটির মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের মহাসচিব ফানুরাত লুকবুন জানান, তার সংস্থা এরই মধ্যে নতুন নিয়ম বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। তবে, কবে নাগাদ এই নির্দেশনা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

সবশেষ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টি গাঁজাকে আবারও অপরাধ হিসেবে ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিলেও জোটসঙ্গী ভুমজাইথাই পার্টির বাধার মুখে তা সম্ভব হয়নি।

ভুমজাইথাই পার্টি দেশটিতে গাঁজা বৈধ করেছিল। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা ও কম্বোডিয়ান নেতা হুন সেনের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তারা সরকার ত্যাগ করতেন। এতে ক্ষমতাসীন দলটির জন্য গাঁজার ওপর কড়াকড়ি আরোপ আরও সহজ হয়েছে।

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক জানান, তিনি ভবিষ্যতে গাঁজাকে পুনরায় মাদক হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে চান।

গত মাসে দেশটির সরকারি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বৈধকরণের পর থাইল্যান্ড থেকে পর্যটকদের মাধ্যমে গাঁজা পাচার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

থাইল্যান্ডের মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গাঁজা বৈধ হওয়ার পর দেশটিতে এর আসক্তির হার বেড়ে গেছে। ফলে সরকারও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিচ্ছে।

সরকারি মুখপাত্র জিরায়ু হউংসাব এক বিবৃতিতে জানান, ‘দেশব্যাপী অসংখ্য দোকানে গাঁজা বিক্রি করা হয়। এর ফলে শিশুসহ সাধারণ মানুষের এটি আরও সহজলভ্য হয়েছে। অথচ সরকারের উদ্দেশ্য ছিল মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান।’

এদিকে, সরকারি সিদ্ধান্তের খবরে তার বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছে গাঁজা বৈধকরণের পক্ষের লোকজন। তাদের দাবি, নতুন নিষেধাজ্ঞাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

আগামী মাসে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভেরও ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি, গাঁজা সেবন ও বিক্রয়কে পুনরায় অপরাধ হিসেবে গণ্য করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন গাঁজাপ্রেমীরা।