প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবের চুক্তির আহ্বান


প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে একটি বৈশ্বিক চুক্তি নিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশগুলো আলোচনায় বসতে যাচ্ছে—এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘উচ্চাকাঙক্ষার, বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যায্য’ একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমাদের এ বছরই একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী, বাস্তবসম্মত ও ন্যায়ভিত্তিক চুক্তি প্রয়োজন।’ যা প্লাস্টিক দূষণকে পরাজিত করার সমাধান হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এমন একটি চুক্তি দরকার যা প্লাস্টিকের জীবনচক্রকে অন্তর্ভুক্ত করে ও সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণ করে।,যাতে বৃহত্তর পরিবেশগত লক্ষ্য, টেকসই উন্নয়ন ও তার বাইরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। যা দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নযোগ্য।’
গুতেরেস আরও বলেন, ‘আমি আলোচকদের প্রতি আহ্বান জানাই—আগস্টে আবার যখন আলোচনায় বসবেন, তখন যেন পারস্পরিক মতভেদ দূর করে একটি অভিন্ন পথ তৈরির দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে আসেন এবং বিশ্ব যে চুক্তির জন্য অপেক্ষা করছে, তা সম্পন্ন করেন।’
তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই মিলে প্লাস্টিক দূষণের অভিশাপমুক্ত হই করি ও একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি।’
জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, প্লাস্টিক দূষণে আমাদের গ্রহের দম বন্ধ হয়ে আসছে—প্রভাব পড়ছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, মানব স্বাস্থ্য এবং জলবায়ুর ওপর।
তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক বর্জ্য নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়, সাগর দূষণ করে, বন্যপ্রাণীদের হুমকিতে ফেলে। এমনকি প্লাস্টিক ক্ষুদ্র কণায় ভেঙে গিয়ে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ছে—এভারেস্টের চূড়া থেকে মহাসাগরের গভীর পর্যন্ত, মানব মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে মাতৃদুগ্ধ পর্যন্ত।’
তবে গুতেরেস আশার কথা শুনিয়ে বলেন, এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বাড়ছে, পুনর্ব্যবহারযোগ্যতার প্রতি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কমাতে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে নানা নীতিমালা গ্রহণ করা হচ্ছে। ‘তবে আমাদের আরও দ্রুত এগোতে হবে।’
‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি আয়োজিত সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিবছর পালন করা হয় দিবসটি।
এ বছর দক্ষিণ কোরিয়া দিবসটির আয়োজক দেশ এবং প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে বৈশ্বিক সমাধান।’
গুতেরেস বলেন, পৃথিবীকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, টেকসই উৎপাদন ও ভোগ, সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে।