সীমান্তে সেনা কমাতে সম্মতি ইন্ডিয়া-পাকিস্তান

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:১৩ মে ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
সীমান্তে সেনা কমাতে সম্মতি ইন্ডিয়া-পাকিস্তান
ছবি : সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সংঘাতের পর উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে সীমান্তে সেনা উপস্থিতি কমাতে এবং অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে একমত হয়েছে ইন্ডিয়া ও পাকিস্তান। সোমবার (১২ মে) বিকেলে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪৫ মিনিটব্যাপী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেন।

ইন্ডিয়ার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই ও পাকিস্তানের মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে আগ্রাসী কর্মকাণ্ড না চালানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই আলোচনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও ইন্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আরেক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার।

গত ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত চার দিনব্যাপী ড্রোন হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়। ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে ৭ মে ‘পহেলগাম হামলা’র প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তানে আক্রমণের পর পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ চালায়। এতে ইন্ডিয়া অধিকৃত কাশ্মীরসহ ইন্ডিয়ার মূল ভূখণ্ডের ২৬টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।

আমেরিকার মধ্যস্থতায় ১০ মে একটি পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। তবে অস্ত্রবিরতির পরপরই নতুন সংঘর্ষের খবর আসে। এই পরিস্থিতিতে সোমবারের আলোচনা অস্ত্রবিরতিকে দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আলোচনায় সীমান্তে সেনা কমিয়ে ‘পিসটাইম লোকেশন’-এ ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়। এতে সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ এবং পাকিস্তান রেঞ্জার্স অবস্থান করবে, আর সেনাবাহিনী থাকবে নিকটবর্তী ক্যান্টনমেন্টে, প্রস্তুত অবস্থায়। যুদ্ধকালীন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সীমান্তে মোতায়েন হওয়া আগ্রাসী বাহিনীগুলোকে পেছনে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছে।

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস ছিল স্থল, আকাশ, সমুদ্র ও সাইবার ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক সমন্বয়ের নিখুঁত উদাহরণ। সীমিত পরিসরে হলেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এই অভিযান ছিল নির্ভুল, সংযত এবং অনুপাতিক।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সিএমএইচ রাওয়ালপিন্ডিতে আহত সেনা সদস্যদের দেখতে গিয়ে বলেন, এই ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় প্রতিক্রিয়া আমাদের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়।

ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ইন্ডিয়া প্রতিশোধমূলক হামলা আপাতত স্থগিত করেছে, তবে পাকিস্তান ভবিষ্যতে কেমন আচরণ করে, তার ভিত্তিতেই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে।

সূত্র: ডন