কারিগরি শিক্ষার মানে ১৩ শতাংশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে
কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৩ শতাংশ শিক্ষার মানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তবে দেশের ৬৭ শতাংশ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ভালো। কিন্ত অধিকাংশই বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার মানে সন্তুষ্ট নয়।
শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে 'যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে স্থানীয় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা' শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে এ সংক্রান্ত গবেষণা উপস্থাপন করে সিপিডি।
সম্মেলনের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ও এসডো। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান।
গবেষণা প্রতিবেদনে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল-কলেজ, পলিটেকনিক এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পরিচালিত কারিগরি শিক্ষা-প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
৬০০ জন বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, ৬০ জন শিক্ষক-প্রশিক্ষক, ২৪০ জন অভিভাবক, ৭৫ জন সরকারি কর্মকর্তা, বিষয় বিশেষজ্ঞ ও চাকরিদাতাদের ৭৫ জনের মতামত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, সাবেক শিক্ষার্থীদের ৬৩ শতাংশের মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকার নিচে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রাংশ নেই, ল্যাবের সংখ্যা অপ্রতুল। পঞ্চগড় ও সুনামগঞ্জে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট না থাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ না থাকায় অসাধু শিক্ষার্থীরা ভাতার জন্য একাধিক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত হয়।
এতে আরও জানানো হয়, প্রতিবছর কারিগরি শিক্ষায় মাধ্যমিক পর্যায়ে সমাপনকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রীর হার কমছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ তাদের ঘৃণার চোখে দেখে।
প্রতিবেদনে শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যক্রমের বাজেট বাস্তবায়নের হার বাড়ানো, চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রণোদনা বাড়ানো, প্রশিক্ষণের প্রচার বাড়ানো, নিড বেজইড ট্রেনিং বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
সিপিডির গবেষণা বলছে, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনায় কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়নে সমানুপাতিক বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগের অভাব রয়েছে। প্রচলিত সাধারণ শিক্ষায় অধিকতর মনোযোগ, বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় অঙ্গীকার ও অগ্রাধিকার চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠ ও ব্যবহারিকভাবে প্রাসঙ্গিক পরিকল্পনা যথাযথভাবে না হওয়ায় কারিগরি শিক্ষার পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। অধিক জনসংখ্যার এই দেশে আত্মকর্মসংস্থান তৈরির একটি অন্যতম সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে কারিগরি জ্ঞানে দক্ষ জনশক্তি।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউসেপ বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব মো. রুহুল আমিন, ইএসডিও এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান প্রমুখ।