ছাত্রলীগ: বহিষ্কার হলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৭৫ শিক্ষার্থী
বিভিন্ন কারণে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৭৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের প্রায় সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার বিজ্ঞপ্তি আকারে তা প্রকাশ করা হয়।
কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্ররাজনীতির নাম ভাঙিয়ে একক কর্তৃত্ব, গোষ্ঠীগত আধিপত্য এবং ব্যক্তিগত হিরোইজম প্রদর্শন, ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অবৈধভাবে রুম দখল, অঙ্গীকার ভঙ্গসহ কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আজ থেকে এই শাস্তি কার্যকর বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ৮৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ও চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীনের স্বাক্ষর রয়েছে। ৮৬ জনের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন করছেন, তাঁদের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ১৭ জন বিডিএসের শিক্ষার্থী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীন বলেন, যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৪ জন ইন্টার্ন রয়েছেন। তাদের শাস্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। ১২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চমেক একাডেমিক কাউন্সিল এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে।
উল্লেখ্য, জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ১১ সেপ্টেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চমেক কর্তৃপক্ষ। এই কমিটির প্রধান ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান। এক মাসের বেশি সময় ধরে অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে কমিটি। এর আগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্ররা নানা অভিযোগ জমা দেন। আওয়ামী লীগের আমলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরও ক্যাম্পাসে রাজনীতি করা, ছাত্রাবাসে অবৈধ প্রবেশ, হল দখলসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি তদন্ত করে।
শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭ জনকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে একবার একাডেমিক কাউন্সিল বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছিল। পুনরায় তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। ওই শাস্তির পাশাপাশি নতুন শাস্তি কার্যকর করা হবে বলে চমেক সূত্র জানায়।
৮৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় ৭ জনকে। ১৫ জনকে দেড় বছরের জন্য, ৩৯ জনকে এক বছরের জন্য, ১৪ জনের জন্য ৬ মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। ১১ জনের কাছ থেকে অভিভাবক ও নিজের মুচলেকা নেওয়া হবে।