বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব অর্থবিভাগে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩০ পিএম
বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব অর্থবিভাগে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ছবি : সংগৃহীত

আন্দোলন-কর্মসূচির ঘোষাণার পর বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ নির্ধারণে নতুন প্রস্তাব পাঠিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যমের কাছে প্রস্তাবনা সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে বাড়িভাড়া এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করে অর্থবিভাগের আদেশ জারির পর রবিবার শিক্ষকরা আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এরপর অর্থবিভাগে নতুন প্রস্তাব পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

নতুন করে প্রস্তাবে চারটি স্লটে শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি উল্লেখ করে বাড়িভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া বাড়ালে কত টাকা ন্যূনতম বাড়বে, ১৫ শতাংশ বাড়ালে ন্যূনতম ভাতা কত হবে, ১০ শতাংশ বাড়ালে ন্যূনতম ভাতা কত হবে এবং ২০ শতাংশ বাড়ালে ন্যূনতম বেতন কত বাড়াবে তা উল্লেখ করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ৫০ থকে ৭৫ শতাংশ উন্নীত করা, শিক্ষক-কর্মচারীদের মেডিক্যাল ভাতা বাবদ ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা ও বাড়িভাড়া এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় উন্নীত করার অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা একটি আধাসরকারি পত্র অর্থবিভাগে প্রেরণ করেছেন।

অফিস আদেশে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিদ্যমান ভাতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বর্তমানে উৎসব ভাতা বাবদ মূল বেতনের ৫০ শতাংশ, মোডিক্যাল ভাতা বাবদ ৫০০ টাকা এবং বাড়িভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা পাচ্ছেন।

অফিস আদেশে শিক্ষাকদের প্রস্তাব উল্লেখ করা বলা হয়, বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাড়িভাড়া ভাতা নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রদানের জন্য আবেদন করেছেন।

প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের আবেদনে বাড়িভাড়া ন্যূনতম ২০ শতাংশ, যা ন্যূনতম হিসেবে তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছিলো। তবে তাদের বেতন বেশি তাদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ বাড়বে।

মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে শিক্ষা উপদেষ্ঠার আধাসরকারি চিঠির উল্রেখ করে বলা হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতষ্ঠানের নির্ধারিত বাড়িভাড়ার পরিবর্তে ন্যূনতম ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া প্রদানের আবেদনটি বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ৭ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাড়া ৫০০ থেকে এক হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ে থেকে শিক্ষা উপদেষ্টার প্রস্তাবটিও গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষা উপদেষ্টার ওই প্রস্তাবের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থবিভাগ শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া এক হাজার থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করে আদেশ জারি করে। রবিবার শিক্ষকরা এই আদেশ প্রত্যাক্ষাণ করে আন্দোলনৈর ডাক দেয়।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী রবিবার বলেন, ‘৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধি আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা কমপক্ষে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া চান। এর সঙ্গে আমাদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা করতে হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করারও দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি মানা হয়নি, তাই আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আন্দোলন ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছি।’ এই দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনেরও ডাক দিয়েছেন।