বিগত কয়েক সপ্তাহের টানা উত্থান শেষে একটি খারাপ সপ্তাহ পার করলো ঢাকা-চট্টগ্রাম পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা; সাপ্তাহিক লেনদেনে দুই বাজারেই সূচক কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় এ সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে চারদিন। রবিবার উত্থান দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও বাকি তিনদিনই পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে।
সারা সপ্তাহের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১৮ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
ঢাকার বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। ২২৭ কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৩৮ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
তবে বাজারে সূচকের পতন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির দাম কমার পরেও কমেনি লেনদেন। প্রতিদিন শেয়ার কেনাবেচায় বিনিয়োগকারীরা অংশ নিয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যার প্রমাণ মেলে গড় লেনদেনের হিসাবে।
ঢাকার বাজারে গত সপ্তাহে প্রতিদিনকার গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮৩৮ কোটি টাকা, যা এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৯১১ কোটি টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮.৬৪ শতাংশ।
লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল ব্যাংক খাতের শেয়ারে। এ খাতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সিটি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার।
লেনদেন বেশি হলেও ইতিবাচক ধারায় ফেরেনি এ খাতের শেয়ার। তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে দাম বাড়েনি একটিরও, কমেছে ৩২ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪ ব্যাংকের শেয়ারের দাম।
সামগ্রিকভাবে ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে ১২ শতাংশের বেশি। তবে ডিএসইর সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুসারে, ভালো অবস্থানে আছে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দাম বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি, লেনদেন বেড়েছে ৬ শতাংশের ওপরে।
ঢাকার বাজারে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে আছে অন্যান্য খাত। পাট, প্রকৌশল, কাগজ ও প্রকাশনা শিল্পে শেয়ারের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে পাট খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৭৫ শতাংশ।
ঢাকার বাজারে সাপ্তাহিক লেনদেনে শীর্ষে আছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রগতির রিটার্ন বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি। ১০৩ টাকার প্রতিটি শেয়ারের দাম সপ্তাহ শেষে বেড়ে হয়েছে ১২৩ টাকা।
অন্যদিকে পতনের তালিকায় শীর্ষে এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড। চার কার্যদিবসে কোম্পানিটির রিটার্ন কমেছে ১০ শতাংশের বেশি।
চট্টগ্রামে মিশ্র লেনদেন
ডিএসই'র ধারা বজায় রেখে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৯ পয়েন্ট। তবে সূচক কমলেও দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেন সিএসইতে অংশ নেয়া ৩১৪ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬০, কমেছে ১৩৬ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে শীর্ষে আছে তাল্লু স্পিনিং মিলস, সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং মিলিস এবং সামাতা লেদার কমপ্লেক্স।
অন্যদিকে তলানিতে বিডি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, হামি ইন্ডাস্ট্রিজ, পিপলস লিজিং এবং এসবিএসি ব্যাংক পিএলসি।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এনসিসি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক এবং খান ব্রাদার্সের শেয়ার।