শেরপুরের মুর্শিদপুর দরবার শরীফে হামলা-ভাঙচুর
শেরপুরের খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৭ জনকে আটক করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আসিফ (২৫), শহিদুল ইসলাম (৩৫), আল মাসুদ (১৫), জিসান (২২), এনামুল হক (৩৫) ও হাফেজ (৩৯) নামের ছয় জনকে জেলা সদর হাসপাতালে এবং জয়নাল নামে গুরুতর আহত একজনকে (২৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের সবার বাড়ি সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
এ ঘটনায় দরবার শরীফের খাদেম মাহমুদান মাসুদ বাদী হয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে গতকাল বিকালে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটি মামলা হিসেবে রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে থানা-পুলিশ।
পুলিশ, লিখিত অভিযোগ ও দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসী সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় অবস্থিত মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ, পীরের দরবারে ইসলামপরিপন্থি কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। গতকাল ভোরে মাদ্রাসাশিক্ষক মো. তরিকুল ইসলামসহ ৪০০-৫০০ জন মানুষ মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা চালান। তারা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। এ সময় দরবারে থাকা খাদেম ও অন্য মুরিদরা তাদের বাধা দিলে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসাশিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘দরবারের লোকজন আপসের কথা বলে দরবারে ডেকে নিয়ে আমাদের লোকজনকে মারধর করেছেন। এতে আমাদের সাত জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দরবারের লোকজন নিজেরাই বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে এলাকাবাসীর ওপর দায় চাপাচ্ছেন।’
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘এ ঘটনায় মুর্শিদপুর দরবার শরীফের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এটি মামলা হিসেবে রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সাত জনকে আটক করেছে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখছে। পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’