যেভাবে আটক হলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে
বাংলাদেশের আলোচিত ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মোহাম্মদ ফতেহ আলীর মেয়ে সাবিনা ইয়াছমিন সিনথিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫) দুপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম এই আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সিনথিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সুব্রত বাইনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করার পর পরই এই আটকের ঘটনা ঘটল। এর ফলে আবারও আলোচনায় এসেছে সুব্রত বাইনের দীর্ঘ ও বিতর্কিত অপরাধ জীবন।
সূত্র অনুযায়ী, গত ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মোহাম্মদ ফতেহ আলীকে (৬১) নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কারণে নারায়ণগঞ্জ থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তার বাবার নাম বিপুল বাইন ওরফে আব্দুল আলীম এবং বাড়ি বরিশাল জেলার আগৈলঝরা থানায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রমতে, সাবিনা ইয়াছমিন সিনথিয়া তার বাবার অপরাধ চক্রের আর্থিক লেনদেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিচালনা এবং পলাতক সহযোগীদের সহায়তার সঙ্গে জড়িত কিনা, সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, সুব্রত বাইন ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন, যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। একই বছর তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হয়। গ্রেপ্তারি এড়াতে তিনি ২০০৩ সালে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে ব্যবসা শুরু, জমি ক্রয় ও বাড়ি নির্মাণ করেন।
২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হলেও তিনি জামিনে মুক্ত হন। ২০০৯ সালে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের তাড়া খেয়ে তিনি নেপাল সীমান্তে পালিয়ে যান এবং নেপালি পুলিশের হাতে আটক হন। অশোভন আচরণের অভিযোগে তাকে ভাদ্রপুর ও পরে ঝুমকা কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১২ সালের ৮ নভেম্বর ঝুমকা কারাগার থেকে বাঁশকাটার চাকু দিয়ে মাটি কেটে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরি করে আরও দশজন কয়েদির সঙ্গে পালিয়ে যান সুব্রত বাইন।