ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ


ময়মনসিংহ বিভাগের সব জেলা থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে পরিবহন শ্রমিকরা নগরীর মাসকান্দা বাসটার্মিনালে অবস্থান নেন। এসময় শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তাসহ অনশন ধর্মঘটের ব্যানারে লেখা ছিল, মিথ্যা অপবাদে শ্রমিকদের পেটে লাথি মারা মানবো না, ষড়যন্ত্র করে গাড়ি বন্ধ করা চলবে না, ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেফতার চাই, শ্রমিক ও যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢাকার পরিবহন মালিকদের নির্দেশে বাসচালক ও শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চালানো বন্ধ করেছেন।
সরেজমিনে নগরীর মাসকান্দা বাসটার্মিনাল ও দীঘারকান্দা বাইপাস মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক যাত্রী ঢাকায় যেতে টার্মিনালে এসেছেন। তবে গাড়ি বন্ধ থাকায় যেতে পারছেন না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসায় বাধ্য হয়ে বাসায় ফিরে যেতে হচ্ছে। এমন দুর্ভোগের কারণে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন যাত্রীরা।
মাসকান্দা বাসটার্মিনালে এসেছিলেন আরিফুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী। তিনি বলেন, ঢাকাগামী বাস বন্ধ থাকবে আমার জানা ছিল না। দ্রুত বাস চলাচল স্বাভাবিক করা প্রয়োজন।
ময়মনসিংহ মোটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী বলেন, শ্রমিকরা আন্দোলন করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আমাদের এক শ্রমিককে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এটা ঠিক হয়নি। এছাড়া কিছুদিন পরপর চালক ও শ্রমিকদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এতেও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এর আগে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) এনসিপির হালুয়াঘাট উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী ও জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হানকে ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা বাসটার্মিনালে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক লাঞ্ছিত করেছেন, এমন অভিযোগে এনসিপি নেতাকর্মীরা মাসকান্দা বাস টার্মিনালে এদিন সন্ধ্যা থেকে অবস্থান নেন। এসময় তারা চার দফা দাবি জানান।
এনসিপির নেতাকর্মীদের দাবিগুলো হলো, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হকের (শামীম) সব গাড়ি বন্ধ করে জব্দ করা, ফ্যাসিস্টের কর্মচারী যারা এখনো মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে চাকরি করছেন তাদের চাকরিচ্যুত করা, শহীদ সাগর হত্যায় শামীমসহ ময়মনসিংহের সব ফ্যাসিস্টকে অবিলম্বে গ্রেফতার, যাত্রীদের সবধরনের হয়রানি বন্ধ এবং যেকোনো উৎসবে বিশেষ করে ঈদ-পূজার সময় গাড়ির ভাড়া বৃদ্ধি না করা।
এদিকে ইউনাইটেড বাস কাউন্টারের সামনে এনসিপি নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি ও এক শ্রমিককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রতিবাদে পরদিন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দীঘারকান্দা বাইপাস মোড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
বিকেলে প্রশাসন শ্রমিকনেতা ও এনসিপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসে। এনসিপির নেতারা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাবেন এবং বাস চলাচলে কেউ বাধা দেবেন না, এমন আশ্বাস পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে শ্রমিকেরাও সড়ক থেকে সরে যান। কিছুক্ষণ পর ঢাকার পরিবহন মালিকদের নির্দেশে বাসচালক ও শ্রমিকরা ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় ইউনাইটেড ও সৌখিন এক্সপ্রেসের বাস চলাচল বন্ধ রাখে। রোববার সকাল থেকে ময়মনসিংহ বিভাগের ঢাকাগামী সব বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়।