বাগেরহাটে জমি নিয়ে বিরোধে চাচাতো ভাইকে ‘চোর’ তকমা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
বাগেরহাটে জমি নিয়ে বিরোধে চাচাতো ভাইকে ‘চোর’ তকমা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো. কালাম খান (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে চোর তকমা দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়িখালী ইউনিয়নের ছোট জামুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কালাম খান ওই ইউনিয়নের ঢেপুয়ারপাড় গ্রামের ওয়াজেদ আলী খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে কালাম খান ও একই বংশের সোহেল খানের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে সোহেল খান তার লোকজন দিয়ে কালাম খান ও তার বড় ভাই লুৎফর খানকে ধরে নিয়ে চুরির অভিযোগে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে কালাম খান অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তায় এনে ফেলে পুলিশে দেন। পরে পুলিশ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় দুই ভাইকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কালাম খানকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বড় ভাই লুৎফর খানের অবস্থায়ও সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত কালামের ছেলে মো. রাব্বি খান মুঠোফোনে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমার আব্বা ও চাচা ওষুধ আনতে পাশের বাজারে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল খান লোকজন নিয়ে তাঁদের ধরে নিয়ে যান। মাকছুদু মাওলানা, মনু খাঁ, খবিরসহ ২৫ থেকে ৩০ জন মিলে আমার বাবা ও চাচাকে তুলে নিয়ে যান। তাঁরা আমার জ্ঞাতিগোষ্ঠীর, চাচারা। আমাগে ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমির একটা মামলা চলে। সেই জমির বিরোধ ছিল ওই চাচাগো লগে। সেই জেরে পরিকল্পিতভাবে আমার বাবারে হত্যা করছে।’ রাব্বি আরও অভিযোগ করেন, ঢেপুয়ারপাড় জামুয়া থেকে ধরে একটি বাগানে নিয়ে মারার পর তাঁর বাবা ও চাচাকে শেখ কান্দায় রাস্তার ওপর এনে ছিনতাই ও চুরির কথা বলে পুলিশে দেন সোহেল খান ও তার লোকজন।

এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে মোরেলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে নিহত কালামের পরিবার। পুলিশ কালামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

অভিযুক্ত সোহেল খান ও অন্যদের বাড়িও ওই এলাকায়। ঘটনার পর থেকে তারা গা ঢাকা দিয়েছেন, মুঠোফোনও বন্ধ। অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, লোকজন দুজনকে চোর হিসেবে ধরে মারধর করছেন, এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। সেখানে একজন মারা যান। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে মারধরকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।