সাদাপাথর লুটের মামলায় সিলেটে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৯ এএম
সাদাপাথর লুটের মামলায় সিলেটে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর লুটের মামলায় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৯)।

শনিবার রাতে নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাহাব উদ্দিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

গত ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপি ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ বিএনপির নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে’ ওই নেতার পদ স্থগিত করে।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম কর্মকর্তা) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় সাতটি মামলা আছে। গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাঁকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে আজ রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব সাহাব উদ্দিনকে ‘সাদাপাথর লুটপাটে অভিযুক্ত অন্যতম মূলহোতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে নগরের কুমারপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাহাব উদ্দিনকে (৫৪) গ্রেপ্তার করে। সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় গত ১৫ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

র‌্যাব বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছে, গত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৯ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।

বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে গত ১৭ মার্চ প্রথম আলোর শেষ পাতায় ‘দখলসূত্রে সরকারি জমির মালিক বিএনপি নেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৮ মার্চ সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযানে নামে স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় প্রায় ৭০ একর জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়। এসব স্থানে থাকা ছোট-বড় ১০০টি পাথর ভাঙার (স্টোন ক্রাশার) যন্ত্র উচ্ছেদের পাশাপাশি প্রায় ৫০টি টিনশেড ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে সরকারি জমি দখলের ঘটনায় গত ১৯ মার্চ সাহাব উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা বিএনপি। পাশাপাশি অভিযোগ তদন্তে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ১০ এপ্রিল ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারি জমি দখল ও লুটপাটের ঘটনায় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্বজনেরা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা সভাপতির নেতৃত্বে এমন অপরাধ সংঘটিত হবে, তা কখনো ভাবা যায় না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও নেতৃত্বের চরম অবমাননা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।