রাজশাহীতে একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তালা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৪ এএম
রাজশাহীতে একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তালা

রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একমাত্র বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ করেই কোনো সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। বিকেলে চিকিৎসা নিতে হলে এখন তাদের বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবাটি চালু থাকলেও তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কেন্দ্রটি বন্ধ অবস্থায় পেয়েছেন। অন্যদিকে রাজশাহী সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, শুধু পবায় নয়, সারা দেশেই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এটি চালু করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন রিফর্ম প্রয়োজন।

পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সকালে আউটডোরে মাত্র দুই টাকার টিকিট কেটে অন্তত ৭০০ রোগী চিকিৎসা নেন। তবে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সরকারি উদ্যোগে বৈকালিক সেবা ২০০ টাকায় চালুর পর প্রাথমিকভাবে রোগীদের সাড়া পাওয়া গেলেও কয়েক মাসের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়। এপ্রিলে রোগী ছিল ৭২, মে মাসে ৯৪ জন, জুনে ৮৮ এবং জুলাইয়ে ৭৬ জন। এরপর হঠাৎ করেই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মাঠে গরু চরছে, প্রধান ফটকের পাশে বাঁধা রয়েছে পাঁচটি গরু। জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার ভবনে তালা ঝুলছে, কাউন্টারও বন্ধ দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, বৈকালিক সময়ে চিকিৎসকরা উপস্থিত থাকেন না। শহরের বেসরকারি হাসপাতালে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ায় এখানে বসা বন্ধ করেছেন। ফলে ৫ আগস্টের পর থেকে এখানে আর কোনো চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না।

রোগীরা বলছেন, বৈকালিক চিকিৎসা বন্ধ থাকায় তাদের বেশি খরচ বেড়েছে।

এনামুল হক নামের এক রোগী জানান, আগে বিকেলে এখানে কম খরচে ভালো ডাক্তার দেখাতেন। এখন না থাকায় আমাদের মতো গরিবদের চিকিৎসা করানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

পবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমি আসার পর থেকেই এটি বন্ধ দেখেছি। কিভাবে বন্ধ হয়েছে সেটিও বলতে পারবো না। আবার এটি যে চালু ছিলো সেটিও জানি না।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক আছে। তারা হয়তো রেস্ট নিচ্ছে। তবে বৈকালিক চিকিৎসা সেবা বন্ধ আছে।

রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, শুধু পবাতেই নয় সারা দেশেই এ সেবা বন্ধ আছে। রোগী আসে না তাই বন্ধ। সরকারিভাবে এটি বন্ধ করেছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারিভাবে এটি বন্ধ করা হয়নি। তবে এটি চালু করতে বা জনপ্রিয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে রিফর্ম করা দরকার।