সখীপুরে রমরমা কাঁঠালের বাজার

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০২ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
সখীপুরে রমরমা কাঁঠালের বাজার

জেলার সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটে জাতীয় ফল কাঁঠালের বাজার এখন রমরমা। প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্বাদে মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই জাতীয় ফলটি শুধু রসনাতৃপ্তিই নয়, স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। হজমে সহায়তা, পানিশূন্যতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে কাঁঠালের ভূমিকা অপরিসীম।

লাল মাটির পাহাড়িয়া অঞ্চল’ বলে খ্যাত টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় কাঁঠাল গাছ আছে। এ সব গাছে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। সখীপুর উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, কচুয়া, মহানন্দপুর, নলুয়া, তক্তারচালা ও দেওদিঘি হাটে নিয়মিত মৌসুমি ফল কাঁঠাল বেচাকেনা হয়। এর মধ্যে কুতুবপুর হাটটি জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে মূলত কাঁঠালের বড় বাজারে রূপ নেয়। যেখানে সপ্তাহে প্রায় ৫০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনা-বেচা হয়।

উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট কুতুবপুর। সেখানে কাঁঠাল নিয়ে এসেছেন স্থানীয় কৃষক এবং ব্যবসায়ীরাও। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাটের আগের দিন বিকাল থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল হাটে নিয়ে আসেন। এরপর পাইকাররা কিনে নিয়ে ট্রাকযোগে সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নলুয়া হাট, সোমবার দেওদিঘি হাট, শনিবার তক্তারচালা হাট, রোববার ও বুধবার কচুয়া হাট, সোমবার ও বৃহস্পতিবার বড়চওনা হাট এবং মঙ্গলবার  মহানন্দপুর হাট। এর একেকটি হাটে সপ্তাহে ২০-৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল বেচাকেনা হয়। সব মিলিয়ে প্রতি সপ্তাহে সখীপুর থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কুতুবপুর হাটের ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বাসসকে জানান, স্থানীয় কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাটে এনে বিক্রি করেন। প্রতি হাটেই ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কাঁঠাল আসে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেগুলো কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। এতে প্রতি হাটেই ন্যুনতম ১৫ লাখ টাকার কাঁঠাল বেচাকেনা  হয়।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, তারা সখীপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাঁঠাল কিনে এনে হাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতিটি কাঁঠালের দাম আকারভেদে ৩০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে তারা প্রতিটি কাঁঠাল ১০ থেকে ২০ টাকা লাভ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। 

কুতুবপুর হাটের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বছর ভরা মৌসুমে এ হাট থেকে ১৫-২০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। প্রতি হাটে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনা-বেচা হয়।

ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী রাব্বি আহমেদ জানান, তিনি প্রতি সপ্তাহে সখীপুর থেকে এক ট্রাক কাঁঠাল (প্রায় দুই হাজার পিস) কিনে নিয়ে যান এবং সপ্তাহজুড়ে বিক্রি করেন। লাভও ভালো থাকে তার। 

সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বাসসকে বলেন, কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এর প্রতিটি অংশই খাওয়ার উপযোগী। এ বছর সখীপুর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। এখানে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এ বিষয় আমরা কৃষকদের সব সময় উদ্বুদ্ধ করছি