ব্রি’র কলসেন্টারে ২৪ ঘণ্টা সেবা পাবেন ধানচাষিরা


ধান উৎপাদনে সার ব্যবস্থাপনা, আগাছা দমন, বালাই ব্যবস্থাপনা কিংবা সেচ সংক্রান্ত যাবতীয় পরামর্শ দিতে সার্বক্ষণিক কলসেন্টার সেবা চালু করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।
এতে দেশের যেকোনো প্রান্তের কৃষক ধানচাষের বিষয়ে সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইনে ফোন করে বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারবেন।
বুধবার (২৫ জুন) গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কার্যালয়ে ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাসভিত্তিক কৃষি পরামর্শ প্রচারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবা চালু করা হয়।
ব্রির পরিচালক গবেষণা ও ব্রি এগ্রোমেট ল্যাবের চিফ ড. মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি এগ্রোমেট ল্যাবের কো-অর্ডিনেটর (সমন্বয়ক) ড. এবিএম জাহিদ হোসেন।
ব্রির ঊর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমিনের উপস্থাপনায় কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগের পিএসও এবং এগ্রোমেট ল্যাবের সদস্য নিয়াজ মো. ফারহাত রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, আবহাওয়ার বৈরী পরিস্থিতির কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের কৃষক ভাইয়েরা ধান উৎপাদনে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এসব সমস্যা সমাধানে করণীয় সম্পর্কে জানাতে ধানের হেল্পলাইন নামে ২৪ ঘণ্টার কল সেন্টার চালু করা হলো। এই (০৯৬৪৪৩০০৩০০) নম্বরে কল করে কৃষক তাদের যাবতীয় সমস্যার সমাধান পাবেন। ব্রির এগ্রোমেট ল্যাবের বিজ্ঞানীরা সরাসরি এই সেবা প্রদান করবেন। ফলে এসব তথ্য উপাত্ত ও পরামর্শ পেতে কৃষকদের আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।
মহাপরিচালক বলেন, ধান চাষ শুধু কৃষকের জীবন-জীবিকা নয়, এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি। কিন্তু কৃষকের সামনে চাষাবাদের প্রতিটি ধাপে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ আসে যেমন-আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন, রোগবালাই, পোকামাকড়ের আক্রমণ কিংবা সারের সঠিক প্রয়োগ এসবের সমাধানে সময়োপযোগী পরামর্শ জরুরি। ব্রির ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন/কলসেন্টার চালুর মাধ্যমে আমরা কৃষকের দোরগোড়ায় সেই পরামর্শ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
ব্রির পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি ও প্রযুক্তি নির্ভর চাষাবাদের যুগে প্রবেশ করতে হলে কৃষকদের হাতের নাগালে তথ্য ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের এগ্রোমেট ল্যাব অত্যন্ত কার্যকর একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। শুধু হেল্পলাইন নয়, আমরা ভবিষ্যতে অ্যাপ ও এসএমএসের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে আবহাওয়াভিত্তিক চাষাবাদ তথ্য পৌঁছে দিতে চাই। এ লক্ষ্যে ব্রি গত ৫ বছরে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
এ সময় তিনি গণমাধ্যম, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, কৃষকের সব চাহিদা পূরণ করা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মিডিয়ার মাধ্যমে এই সেবার তথ্য ছড়িয়ে দিলে দেশব্যাপী কৃষকেরা উপকৃত হবেন। সবাই মিলে কাজ করলে প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই কৃষি বাস্তবায়ন সম্ভব।