খুলনায় দুই নারীর করোনা শনাক্ত, প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে হাসপাতালগুলোতে প্রস্তুতি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৭ জুন ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
খুলনায় দুই নারীর করোনা শনাক্ত, প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে হাসপাতালগুলোতে প্রস্তুতি

খুলনায় গত কয়েকদিন ধরে করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে রোগীদের ভীড় লক্ষ করা গেছে। ইতোমধ্যে অনেকেই পরীক্ষা করিয়েছেন, যার মধ্যে দুই নারীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) খুমেক হাসপাতাল ও খুলনা জেনারেল হাসপাতালে পৃথক পরীক্ষায় তাদের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।

খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. খান আহমেদ ইশতিয়াক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি করোনার নতুন ঢেউ মোকাবিলায় খুলনায় নানা প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ডা. ইশতিয়াক জানান, আক্রান্ত দুই নারীর নাম সুমাইয়া ও তানিয়া। তাদের মধ্যে সুমাইয়াকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট না থাকার কারণে সংক্রমণের তথ্য মিলছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে দেশব্যাপী করোনার প্রকোপ আবার বাড়তে শুরু করায় প্রস্তুত করা হচ্ছে হাসপাতালগুলো। এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০টি আইসিইউ শয্যাও প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তবে করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালটিতে মাত্র ৭৫টির মতো র‌্যাপিট অ্যান্টিজেন কিট রয়েছে যা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। করোনা পরীক্ষার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ হাজার কিটের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, পিসিআর মেশিনটিও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে খুলনা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ৪০০টির মতো কিট রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ডা. ইশতিয়াক বলেন, ‘করোনার প্রাদুর্ভাব নতুন করে দেখা দেওয়ায় খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেলও প্রস্তুত। বর্তমানে ৪০টি আইসোলেশন ও দশটি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত আছে। এনেসথেশিউলোজিস্ট ও করোনার জন্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও প্রস্তুত আছেন।’

খুলনাবাসীকে করোনার চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

খুমেক হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে খুলনায় করোনা পরীক্ষাই হয়নি। ফলে মজুদ করা কিটের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তবে বর্তমানে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের পৃথকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।

এ বিষয়ে খুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি ও পুরো শরীরে ব্যাথা—এমন কোনো রোগী পেলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তার পরীক্ষা করাচ্ছি। তাছাড়া, শ্বাসকষ্টসহ করোনার অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে যারা আসছেন, তাদের আলাদাভাবে নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছি। এখানে লাল, হলুদ ও গ্রিন জোন ভাগ করে পৃথকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’

নমুনা সংগ্রহকারীদের দেওয়া তথ্যমতে, এখনই প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ জন করে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতালে আরটিপিসিআর মেশিন ব্যবহার করার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি হাসপাতালে নেই। পাশাপাশি অক্সিজেন সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত আছে, অতিরিক্ত ৫০০ অক্সিজেন সিলিন্ডার হাসপাতালে মজুদ রয়েছে।