লালমনিরহাটে ভাসমান ড্রাম সেতুতে হাজারো মানুষের কষ্ট লাঘব


লালমনিরহাটের পাটগ্রামে নির্মাণ করা হয়েছে এক অভিনব ভাসমান ড্রাম সেতু। উপজেলার সানিয়াজান নদীর ওপর নির্মিত ২০০ ফুট দীর্ঘ ভাসমান এ সেতুটি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্টের কিছুটা লাঘব করেছে, তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে সেতুটি।
স্থানীয় জনগণের সহায়তায় প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর বাঁশের চাটাই জোড়া লাগিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন। এমন ভাসমান ড্রাম সেতু সবার নজর কেড়েছে। সেতুটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা।
গত ৩ মার্চ সেতুটি উদ্বোধন করেন পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ডা. শামসুল আলম।
ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সানিয়াজান নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত শুরু হয়েছে। এতে তিন গ্রামের মানুষের মধ্যে ঈদের খুশি বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে বাউড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডা. শামসুল আলম বলেন, ‘এখানে ব্রিজ না থাকায় প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। তাই আমরা সবার সহযোগিতায় বিএনপি নেতা কর্মীদের নিয়ে এ ভাসমান সেতুটি করেছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘সেতুটি নির্মাণে কাজ করেছেন ওই গ্রামের প্রায় ৩০ জন সাধারণ মানুষ। সেতু নির্মাণের ব্যবহার হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম, বাঁশ, লোহার অ্যাঙ্গেল ও দড়ি।’
স্থানীয়রা জানান, গেল বন্যার পর থেকে এ নদীতে কোনো ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়। পরে বিএনপির কয়েকজন নেতা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি হয় ভাসমান ড্রাম ব্রিজ ।
স্থানীয় আরাফাত হোসেন বলেন, বন্যায় প্রতি বছর এখানকার মানুষ কষ্ট পোহাতে হয়। তাই সবার সহায়তায় বিএনপি-ছাত্রদল নেতারা মিলে এবার ড্রাম দিয়ে ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার সময় নদীর পানি যতই বাড়বে ড্রামগুলো ততই ভেসে উঠবে, এতে চলাচলের কোনো কষ্ট হবে না। তাই আমরা ড্রাম কিনে সেতুটি করেছি।’
এলাকার হামির উদ্দিন গ্রামার স্কুলের শিক্ষার্থী সাহিন বলেন, ‘সেতু নির্মাণের ফলে আমরা খুব সহজে স্কুল-কলেজে যেতে পারি। আগে এ পথ দিয়ে অনেক কষ্টে স্কুলে যেতাম; এখন আর ভিজে যেতে হয় না। খুব কম সময়ে আমরা স্কুলে যেতে পারি।‘
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিল্লুর রহমান বলেন, তিনি এই উপজেলাতে নতুন যোগদান করেছেন।
এ কারণে ভাসমান সেতুর বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেবেন বলে জানান ইউএনও।