শাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ: দুই আসামির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর


সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দুই শিক্ষার্থীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৩ জুন) অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক হারুন রশিদ এই আদেশ দেন। রিমান্ড শুনানির সময় গ্রেপ্তার দুই আসামি শাবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান (২৩) ও স্বাগত দাস পার্থ (২২) কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত পুলিশের পরিদর্শক মো. আহসান হাবিব আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
পুলিশ জানায়, গত ২০ জুন গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে আদনান ও স্বাগতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগে, ভুক্তভোগী ছাত্রী ১৯ জুন কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ঈদের আগে গত ২ মে একটি কনসার্টে যাওয়ার কথা বলে এক পরিচিত যুবক ওই ছাত্রীকে সুবিদবাজার এলাকার একটি মেসে ডেকে নেন। সেখানে কোমল পানীয়ের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে পান করানো হয়। পরবর্তীতে অসুস্থ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, ধর্ষণের সময় ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা ফাঁসের হুমকি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইলও করা হয়।
ঘটনার পর গত ১৯ জুন ভুক্তভোগী ছাত্রী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে, প্রক্টরের পরামর্শে আইনি সহায়তা নেওয়া হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মুহাম্মদ শামছুল হাবিব এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারের সময় আসামিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ডিভাইসে ঘটনার ডিজিটাল প্রমাণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পেছনের বিস্তারিত, প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা—তা জানার চেষ্টা করা হবে।
উল্লেখ্য, ঈদের পূর্বে সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারে একটি কনসার্টে যাওয়ার পূর্বে অচেতন করে সহপাঠীর দ্বারা ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
সহপাঠী ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থের বিরূদ্ধে অবিযোগ দেয় ওই ভুক্তভোগী। শুধু যৌন নির্যাতন নয়, তা ভিডিও ধারণ করে নিয়মিত অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে ব্লাকমেইল করেছিল বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ১৯ জুন রাতেই দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে ২০ জুন সিলেট কোতোয়ালি থানায় আটক দুজন ও অজ্ঞাতসহ ৫ জনের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।