ইশরাকের মেয়র ঘোষণার গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিতের বিষয়ে আপিল শুনানি বুধবার


বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আপিল শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছেন চেম্বার বিচারপতির আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ মে) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
আদালতে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন।
এর আগে গত ২২ মে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ কারে দেন হাইকোর্ট। পরে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়। আবেদনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে এই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস। সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন বিএনপি নেতা ইশরাক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।
এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এদিকে গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
পরে মামুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে ২৭ মার্চের রায় এবং ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন বেআইনি হবে না এবং ইশরাক হোসেনের শপথ পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। রিট আবেদনটির শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ২২ মে সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে ইসির গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।