প্রতিশোধ চাই না, ন্যায়বিচার চাই: জামায়াত আমির

Staff Reporter
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৭ মে ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম
প্রতিশোধ চাই না, ন্যায়বিচার চাই: জামায়াত আমির
ছবি : সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা প্রতিশোধ চাই না, আমরা চাই ন্যায়বিচার। এই রায়ের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার, এটি ছিল নেতৃত্বের গণহত্যা।

মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পরপরই রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মুক্তিযোদ্ধা হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে তিনি আরও বলেন, একজন দায়িত্বশীল নেতা প্রতিদিন জন্মায় না। তাদের হত্যা করে জাতিকে নেতৃত্বহীন ও অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

ডা. শফিকুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, যিনি আজহারুল ইসলামকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তিনি যেন তাকে দিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত করেন এবং তাকে নেতৃত্বের দায়িত্ব পালনের তাওফিক দেন।

জামায়াতের আমির বলেন, আমি আল্লাহর দরবারে লাখ লাখ শোকর আদায় করছি। আমরা দীর্ঘদিন এমন একটি রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আজ আল্লাহ আমাদের সেই দিন উপহার দিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিগত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে ১১ জন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে মিথ্যা মামলায়, সাজানো আদালত ও জাল সাক্ষ্যের মাধ্যমে কার্যত ‘জুডিসিয়াল কিলিং’ করা হয়েছে। আমরা তাদের জন্য আল্লাহর কাছে শাহাদাতের সর্বোচ্চ দরজা কামনা করছি।

তিনি আরও বলেন, আজ যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে এটিএম আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই রায় প্রমাণ করে, সত্যকে চিরকাল চাপা দিয়ে রাখা যায় না। যদি এই রায়ে অভিযুক্ত নেতারা আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তারা তাদের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে জাতিকে উপকৃত করতে পারতেন।

ডা. শফিক বলেন, আদালতগুলো কার্যত ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ হিসেবে কাজ করেছে। যেখানে জাল-জালিয়াতি করে সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার বইয়ে স্বীকার করেছেন, কীভাবে বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, এই সব মামলার সময় ‘সেইফ হোম’ ও ‘সেইফ হাউস’ নামের দুইটি টর্চার সেল তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে নেতাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে লোক ধরে এনে সেইফ হাউসে রাখা হতো। যাত্রাবাড়ীর একটি ঠিকানায় এসব ঘটনা ঘটেছে।

ডা. শফিক দাবি করেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই বিচার প্রক্রিয়ার নিন্দা জানিয়েছেন। ‘ন্যায়ের গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের একটি আদালত বলেছেন, এই মামলা ছিল ‘জেনোসাইড অব জাস্টিস’। আজকের রায়ে আমাদের আদালতও কার্যত সেই কথাই বলেছেন। এই মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়ায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মানা হয়নি। সংবিধান, এভিডেন্স অ্যাক্ট ও ফেয়ার ট্রায়ালের ন্যূনতম শর্তও লঙ্ঘন করা হয়েছে।