বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক মুছে ফেলতে হবে: নাহিদ


দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে তাদের প্রতীক ‘নৌকা’ মুছে ফেলার দাবি জানিয়েছেন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (২ মে) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই—অবিলম্বে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে, নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। বিচার চলাকালীন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার আর কোনো আলোচনার প্রশ্ন থাকে না। এজন্য আমরা বলছি, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে তার রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম বিচার চলা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
নাহিদ আরও বলেন, দুঃখের বিষয় বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেখছি বিগত নয় মাসেও বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি। জুলাইয়ের শহীদ পরিবার এবং যারা নিহতদের রাষ্ট্র যে দায়িত্ব নেবার কথা ছিল, তাদের যে মর্যাদার জীবন নিশ্চিত করার কথা ছিল, সেটা নিশ্চিত করতে পারেনি এই অন্তর্বর্তী সরকার।
তিনি বলেন, আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি, যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে— তারাও জামিনে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় মামলা বাণিজ্য করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে আওয়ামী লীগ তৃণমূলের পুনর্বাসিত হওয়ার পরিকল্পনা করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন কমিশন গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকদের প্রার্থিতা অযোগ্যতা ঘোষণা করতে সম্মত হচ্ছে না। তারা বলছে— এটি নাকি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। নির্বাচন সংস্কার কমিশন সুস্পষ্টভাবে সুপারিশ করেছে—যারা গণহত্যা করেছে, যারা লুটপাট করেছে, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা কোনোভাবেই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখনো সে প্রস্তাবে সম্মত হচ্ছে না।
নাহিদ বলেন, আমরা সন্দেহ প্রকাশ করছি— এই নির্বাচন কমিশন কার পারপাস সার্ভ করবে। ভুলে গেলে চলবে না গণঅভ্যুত্থানের পরে এই নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখছি বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করছে প্রশ্ন করার সাহস করছে শেখ হাসিনা কি গণহত্যাকারী—সেটা কি প্রমাণিত হয়েছে, কি প্রমাণিত হয় নাই?
তিনি বলেন, সেই সব সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলতে চাই— আপনারা সাংবাদিক নয়। আপনারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে জাতিসংঘের রিপোর্টেও স্পর্ষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে—শেখ হাসিনার নির্দেশে, আওয়ামী লীগের নির্দেশে, আওয়ামী লীগের পরিকল্পনায় এই জুলাই আগস্টে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত।
নাহিদ বলেন, বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে সেই জুলাই ঘোষণাপত্র এখনো আসছে না। ......অবিলম্বে এই জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামোর ও শাসন ব্যাবস্থার আমূল পরিবর্তন করে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কারের উদ্দেশ্য জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে এবং জুলাই সনদে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা থাকতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, নতুন সংবিধানের জন্য আগামী নির্বাচন, আইনসভা এবং গণপরিষদ নির্বাচন একত্রে করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধাদের দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্র ও সরকারকে।
নাহিদ বলেন, এনসিপি নতুন বাংলাদেশ, নতুন বন্দোবস্ত বিনির্মাণে গঠিত হয়েছে। ...যে জাতি আমাদের উপর ৫ অগাস্ট আস্থা রেখেছিল, আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে এনসিপির উপর জনগণ তাকিয়ে আছে এবং সেই আস্থা রাখছে।