বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য রাজনৈতিক, সরকারের সঙ্গে দূরত্ব নেই: উপদেষ্টার রিজওয়ানা 

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য রাজনৈতিক, সরকারের সঙ্গে দূরত্ব নেই: উপদেষ্টার রিজওয়ানা 
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে কথা বলেছেন তা রাজনৈতিক বক্তব্য। তাদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে 'ন্যাচারাল ক্যাপিটাল ম্যাপিং বা দেশের পাহাড় ও টিলাসহ প্রাকৃতিক সম্পদের মানচিত্র প্রণয়ন কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।

জুলাই-আগস্টের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে গ্যাপ (দূরত্ব) তৈরি হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, 'এটা গ্যাপের প্রশ্ন না। পুরো প্রক্রিয়াটা যদি আপনি খেয়াল করেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করছে, সকল রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ তাদেরকে লিখিত মতামত দিয়েছে। কাজেই সংস্কারের ধারণাটাকে তারা গ্রহণ করেছে। তারাই প্রথম থেকে বলে আসে সংস্কার প্রয়োজন আছে।'

তিনি বলেন, 'এখন যে কোন একটি রাজনৈতিক দল তার রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতেই পারে। তার একটা অডিয়েন্স আছে সে তার মত করে তার কথা বলবেন। এখানে গ্যাপের বিষয় নয়।' 

'রাজনৈতিক দলগুলো যে বক্তব্য দেন সেগুলো তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য। এখানে বিরোধের জায়গা নেই, তারা জিনিসটা একভাবে দেখেন, আমরা হয়তো আমাদের একটা কর্মপরিকল্পনায় আছি। সবকিছু নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত আসবে।'

উপদেষ্টা বলেন, 'বিএনপির মহাসচিব রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হিসেবে কথা বলেছেন। আমরা আমাদের জায়গা থেকে কথা বলেছি।'

'আশা করা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব।'

জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয় না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'কয়েকটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলছে। একটি হচ্ছে সংস্কার, আরেকটি হচ্ছে নির্বাচনের রোডম্যাপ, আরেকটি হচ্ছে বিচারের দাবি। এই যে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডগুলো হল, শত শত কিশোর-কিশোরী তাদের দৃষ্টিশক্তি হারালো, এগুলোর বিচার না হওয়া পর্যন্ত যাদেরকে এগুলোর ব্যাপারে অভিযুক্ত করা হয়, তাদের সঙ্গে আলোচনার স্পেস কতটুকু, সেটা এখনও একটা বড় প্রশ্ন?'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাদের স্বার্থে অবশ্যই আমাদের সকল অভিন্ন নদীতে আমাদের যে স্বার্থ সেটা রক্ষা করতে হবে। গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০২৬ পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করব। আমাদের যে প্রস্তুতি সেটা আমরা শুরু করে দিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'অনেক সময় আপনারা শুনবেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা চাই বা চাই না। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় কি আছে- আপনারা কখনো দেখেছেন? না দেখে চাই কেন, আবার চাই না-ও বা কেন?' 

'আমার কথা হচ্ছে তিস্তা নদীর লোকজন কি চায়- সেটার উপর ভিত্তি করে আমরা তিস্তার ব্যাপারে একটা পরিকল্পনা করব। এটাকে আমরা পরিকল্পনা বলবো, মহাপরিকল্পনা বলবো, না কর্মসূচি বলব- সেটার পরের কথা। আমরা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি তিস্তার ব্যাপারে যে দেশই সহযোগিতা করুক না কেন, জনগণের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে জনগণ যা চায়, পরিকল্পনায় সেটা প্রতিফলন ঘটাতে হবে। জনগণের সঙ্গে আলোচনাটা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় করবে।'

আগামী মাসের শুরুতে স্থানীয় জনগণের পরামর্শ নেওয়ার কাজটি শুরু করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা।

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারতকে চিঠি পাঠানোর অগ্রগতি জানতে চাইলে রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'আমরা যেটুকু বিভিন্ন মাধ্যমে বুঝেছি, এখন পর্যন্ত ভারতের অবস্থান তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। আনুষ্ঠানিক উত্তর আমরা যখন পাবো, তখন আপনারা জানতে পারবেন।'