হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক

Bangla Post Desk
ইউএনবি
প্রকাশিত:২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম
হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান, পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।

এদিন সভার শুরুতে হাসান আরিফের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় রিজওয়ানা হাসান জানান, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের কবরের পাশে হাসান আরিফকে সমাহিত করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, আজ অনেক কথাই মনে পড়ছে। তিনি সবসময় মনে করিয়ে দিতেন- আমরা কিন্তু সমবয়সী!

তিনি বলেন, শিশুর মতো সরল ব্যবহার ছিল তার। যত রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে, যেখানে কোনো কোন্দল দেখেছেন, তিনি হাজির হয়েছেন তা সমাধানে। এক অপূর্ব লোক আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন।

অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা হাসান আরিফ ছিলেন সদা হাস্যময় একজন বিরল ব্যক্তিত্ব।

পাট, বস্ত্র ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে হাসান আরিফের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। অতীতের কর্মময় জীবনের আমাদের দুজনের অনেক স্মৃতি রয়েছে।

সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, এখানে কাজ করতে এসে উনার সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। উনি আমাদের জন্য এক ইতিবাচক প্রেরণা ছিলেন।

মৎস্য ও পশু সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, আজকে আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আমরা হাসান আরিফকে মিস করছি। উনাকে ছাড়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আইনজীবী হিসেবে হাসান আরিফের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন হাসান আরিফ।

আইন ও বিচার এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, একজন কর্মনিষ্ঠ ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন হাসান আরিফ। তিনি সব নথি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, হাসান আরিফ কখনও কোনো কাজ কম গুরুত্বের সঙ্গে নিতেন না।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, হাসান আরিফ অমায়িক মানুষ ছিলেন। যেকোনো সমস্যা উনার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা যেত।

জ্বালানি ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আমাদের সমাজে বিভেদ অনেক বেশি। এ বিভেদ জোড়া লাগানোর মানুষ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। সর্বমহলে উনার গ্রহণযোগ্যতা ছিল।

১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সইয়ের সময় হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, উনি পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের নিয়ে অনেক ভাবতেন। তার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের।

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে এসে উনাকে চিনেছি। উনাকে সবসময় শিক্ষকের মতো পাশে পেয়েছি।

তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, উনার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একবারও আমাদের বয়সের পার্থক্য বুঝতে পারিনি। উনি সবার সঙ্গে আন্তরিকভাবে মিশতেন।

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন আয়োজনে আন্তরিকভাবে কাজ করতে দেখেছি উনাকে। এবারও উনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, বেসামরিক বিমান সচিব নাসরীন জাহান, ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ প্রমুখ।