শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করে বিচারের আওতায় আনা হবে: ইউনূস

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ পিএম
শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করে বিচারের আওতায় আনা হবে: ইউনূস

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

'দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ক্লাইমেট ফরোয়ার্ড ইভেন্ট'-এ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন হবে না? তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন তাহলে তাকে প্রত্যর্পণ করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। তাকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

এরপর বলেন, ‘তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। আপনি তো বিচারের পক্ষে কথা বলছেন, তাহলে উনারও তো বিচারের সম্মুখীন হওয়া উচিত।’

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে আইনবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সম্প্রতি বলেছেন, ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় কোনো দণ্ডিত ব্যক্তির বিচার শুরু হলে বাংলাদেশ অবশ্যই তার প্রত্যর্পণ চাইবে।

ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, কোনো দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি ভারতে থেকে গেলে আমরা তার প্রত্যর্পণ চাইতে পারি। আমরা শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আপনাদের জানাব।’

গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তদন্ত ও প্রসিকিউশন টিম গঠনসহ কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ইউনূস বলেন, 'কোনোভাবেই নয়, এটা আমার জন্য নয়।’

তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো পরিকল্পনা তার নেই। ‘যারা নির্বাচনে অংশ নেয়, আমাকে কি তাদের মতো মনে হচ্ছে?’

'গণপিটুনি' বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিদেশের মানুষ অতিরঞ্জিত সংবাদ পাচ্ছে এবং তাদের নিজের চোখে দেখে রিপোর্ট করার জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানান।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, যেহেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাই বেশি দেরি করা ঠিক হবে না।

সংস্কার অর্জনের জন্য গঠিত কমিশনগুলো হলো- বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, সরফরাজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন, টিআইবির ড. ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন কমিশন, আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এবং ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

এই কমিশনগুলো ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে এবং তারা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

'তুমিই কারণ, আমরা ভোগান্তির শিকার।’

ইউনূস আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার বৈশ্বিক প্যারিস চুক্তি ততদিন কাজ করবে না, যতদিন বিশ্ব বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে টিকে থাকবে।

তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা সর্বাধিক মুনাফা অর্জন, একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য সম্পদ তৈরি এবং ব্যাপক বর্জ্য সৃষ্টির উপর কেন্দ্রীভূত।

মানুষ 'আত্মবিধ্বংসী সভ্যতা' তৈরি করেছে উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, 'আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি তা এই গ্রহের ধ্বংসের চাবিকাঠি।’

নিউইয়র্ক টাইমস ক্লাইমেট ফরোয়ার্ড সামিটে ইউনূস বলেন, চুক্তিতে যত পরিবর্তনই আনা হোক না কেন, এটি কোনো পার্থক্য আনবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তর্নিহিত ব্যবস্থাগুলো নতুন করে সাজানো হচ্ছে।