ছাত্রলীগের নেতার হুমকি ‘ছোট ভাই প্রটেকশন বাড়াও’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে হত্যার হুমকির ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমন হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক পোস্টে তিনি এই হুমকি দেন, যা রাজধানীতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার দিনেরই ঘটনা। হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন এবং দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন।

আসাদুল্লা-হিল-গালিবের পোস্টটি মূলত রাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গালিব তার পোস্টে লিখেছেন: ‘দয়া করে আমার ক্যাম্পাসেরটাকে কেউ কিছু করবেন না, অনুরোধ রইল। ওইটা শুধু আমার আর আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর ভাগ।’

তিনি সালাহউদ্দিন আম্মারকে উদ্দেশ্য করে আরও লেখেন, ‘ছোট ভাই প্রটেকশন বাড়াও। ৮০ সিসি বাইক নিয়ে একা একা ঘুরাঘুরি করো না। আর তোমার আব্বা সাদিক কায়েম হেলিকপ্টারে যাতায়াত করে, তুমি অন্তত প্লেনে ঢাকা যাবা, তা নাহলে যমুনার আগে ও পরে একটা কিছু হলেও হতে পারে। আমি চাই তুমি বেঁচে থাকো, অনেক হিসাব আছে।’

গালিবের এই পোস্টে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু মন্তব্য করে বিষয়টিকে আরও উসকে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া কর, যেন ওকে বাঁচিয়ে রাখে।’

এর আগে থেকেই গালিব একাধিক পোস্টে রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের ছবি ব্যবহার করে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

গালিবের এই হুমকির পর সালাহউদ্দিন আম্মারও ফেসবুকে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লেখেন: ‘প্রথম টার্গেট কেন হইলাম না? আমার হাদি ভাই তো সাবধান হয়ে যেতে পারত! ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই জারি থাকবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। হাদিদের প্রত্যেকটা ফোঁটা রক্তে বিপ্লবের ইতিহাস লিখবে। আরে আল্লাহর জান আল্লাহ নিবে, আমি আটকানোর কে?’

আজ (রোববার) সকালে সালাহউদ্দিন আম্মার গণমাধ্যমকে বলেন, জুলাইয়ের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই তিনি কল, মেসেজ ও ই-মেইলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি পেয়ে আসছেন। তিনি স্বীকার করেন যে, হাদি ভাইয়ের ঘটনার পর তাকে টার্গেট করা হয়েছে জেনে কিছুটা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। তবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমরা এমন পথ বেছে নিয়েছি, হুমকি তো আসবেই। এগুলো এত গুরুত্ব দিচ্ছি না।’

ঘটনাস্থলের এই হুমকির ঘটনাটি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা এবং নির্বাচন পূর্ববর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।